দুপক্ষের বিরোধ, গুলিতে প্রাণ গেল শিশুর

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় দুপক্ষের বিরোধকে কেন্দ্র করে ছোড়া গুলিতে এক শিশু মারা গেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অপর দুজন। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই শিশুর নাম সাব্বির মিয়া (১০)। সে নবীগঞ্জ উপজেলার দিঘলবাক ইউনিয়নের নগরকান্দা গ্রামের আবদুল কাইয়ুমের ছেলে। আলমপুর গ্রামে মামা ইজাজুলের বাড়িতে থেকে স্থানীয় মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত সাব্বির।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা রানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মজনু মিয়ার সঙ্গে তাঁর ভাই খালেদ মিয়ার রানীগঞ্জ-শেরপুর বাসস্ট্যান্ডের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। ওই বাসস্ট্যান্ডে মজনু মিয়ার ছেলে নোমান আহমদ ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এ বিরোধ নিয়ে শুক্রবার বিকেলে বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিক ও মালিক সমিতির সভা ডাকা হলে মজনু মিয়া সভায় উপস্থিত হননি। সভায় মজনু মিয়ার ছেলেকে ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আলমপুর গ্রামের ইজাজুল, মমরাজ, দুলনসহ কয়েকজন মজনুর বাড়িতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। বাড়ি থেকে বের হয়ে ফেরার পথে মজনু মিয়ার পক্ষে কারও একজনের ছোড়া গুলিতে ইজাজুল মিয়ার ভাগনে সাব্বির মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

ইজাজুল মিয়া দাবি করেন, ‘মজনু মিয়ার ছেলের এলোপাতাড়ি গুলিতে আমার ভাগনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।’ তিনি বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ডের মালিক ও শ্রমিকদের সভার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আমরা তাঁর বাড়িতে যাই। তিনি এ ঘটনা ঘটাবেন তা ভাবতে পারিনি।’

ইজাজুল আরও বলেন, ‘গুলির শব্দ শুনে কোনো কিছু বুঝতে না পেরে আমার ভাগনে বাড়ির পাশে গেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।’ এ বিষয়ে কথা বলতে মজনু মিয়ার মুঠোফোনে কল দিলে তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক শারমিন আরা আশা বলেন, ‘ছিটা গুলিতে বিদ্ধ হয়ে এক শিশু মারা গেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত মোজাম্মিল মিয়া (২০) ও আকবর আলীকে (২৭) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহত শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।