সেতু নেই, পাটগ্রামের ১০ গ্রামে দুর্ভোগ
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের জুম্মারপার ও জোড়াপুল গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সানিয়ারজান নদে সেতু নেই। এ কারণে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন লোকজন। এই স্থানে সেতু হলে ইউনিয়নটির দশটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
পাশের ডাঙ্গারপাড়া গ্রামের মোজ্জাফারুল হোসেন বলেন, ‘কত দিন ধরি উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার অফিসের লোকজন আইসে আর নদীর ওপর পুল দিবার জন্য মাপি যায়। পুল খান তো আর হয় না।’
স্থানীয় লোকজন জানান, বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে যানবাহনসহ মালামাল পরিবহন করা যায় না। এ জন্য প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে পাবনাপাড়া গ্রামের বেইলি সেতু দিয়ে মালামাল পরিবহন করতে হয়। এতে অর্থ ও সময় খরচ বেশি হয়। আবার বর্ষাকালে নদ ফুলেফেঁপে উঠলে স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে যায়। তখনো অর্থ ও সময় অপচয় করে ঘুরে পথ চলতে হয়।
সানিয়ারজান নদের দক্ষিণ পাশে কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি, গুয়াবাড়ি, লক্ষ্মনাথের কামাত, জুম্মারপার, মিঠুরকামাত, পাবনাপাড়ার একাংশ ও গোলডাঙ্গা গ্রাম। একই পাশে ১ নম্বর পানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুম্মারপার ফোরকানিয়া মাদ্রাসা রয়েছে। উত্তর পাশে জোড়াপুল, পানবাড়ির একাংশ, ফকিরপাড়া ও নতুনবাজার গ্রাম। এ পারে আরও রয়েছে বোছারহাট ও ভ্যালেং নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পানবাড়ি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও পানবাড়ি কিন্ডারগার্টেন। দক্ষিণ পারের লোকজন সাঁকো পার হলে সাত কিলোমিটার পর পাটগ্রাম উপজেলা সদর।
লক্ষ্মনাথের কামাত গ্রামের আবদুল গফুর বলেন, ‘কৃষিপণ্য নিয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করা যায় না। ছয় কিলোমিটার মাটিয়া রাস্তাসহ ১৫ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে রসুলগঞ্জ হাটে যেতে হয়। এতে পণ্য বহনের খরচ বেড়ে যায়।’
গত বুধবার গিয়ে দেখা যায়, নদের ওপর ১৫০ হাতের বাঁশের সাঁকো। এর ওপর দিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী। এতে সাঁকোটি নড়বড় করছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদ ভরাট হলে বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। তাই তিন বছর আগে গ্রামের লোকজন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সাঁকোয় কংক্রিটের খুঁটি দেন। তা-ও স্রোতে ভেসে যায়। সেই কংক্রিটের খুঁটি ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে।
পাটগ্রাম কলেজের ছাত্র জুয়েল মিয়া বলেন, গ্রামের অনেক ছেলেমেয়ে উপজেলা শহরের স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া করে। নদটির ওপর সেতু না থাকায় অনেকে বর্ষাকালে বিদ্যালয় ও কলেজে যেতে কষ্ট হয়। ছয় কিলোমিটার ঘুরে যে পথে যেতে হয় সেখানে হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়। সে কারণে অনেকে স্কুল-কলেজে যেতে চায় না।
কুচলিবাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান হামিদুল হক বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিমধ্যেই স্থানীয় সাংসদ মোতাহার হোসেনের সঙ্গে সেতুটি করার বিষয়ে কথা বলেছি।’
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)) উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মো. শামসুজ্জামান বলেন, ইতিমধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু যাবে বলে তিনি আশা করছেন।