উন্নয়নের অনেক সূচকে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অনেক দেশকে অতিক্রম করেছে: তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: বাসস
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: বাসস

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, উন্নয়নের অনেক সূচকে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই অনেক দেশকে অতিক্রম করেছে। আর এগুলোর সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে।

তথ্যমন্ত্রী আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) দুই দিনব্যাপী ১৬তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে আমাদের ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুর জন্য পাশের দেশের ওপর নির্ভর করতে হতো। এখন আমাদের পর্যাপ্ত প্রাণিসম্পদ রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে গবেষণা এবং নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিভাসুর উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান। স্বাগত বক্তব্য দেন সিভাসুর ওয়ান হেলথ ইনস্টিটিউটের পরিচালক শারমীন চৌধুরী।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ইন্টেন্সিফিকেশন অব লাইভস্টোক অ্যান্ড ফিশারিজ ফর এচিভিং ফুড সেফটি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সিকিউরিটি: চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড অপরচুনিটি’।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে। কমেছে আবাদি জমির পরিমাণ। তারপরও বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশ এ বছর দুই লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও বলেন তিনি।

দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং পেশাজীবীদের এ সম্মেলন জ্ঞান ও গবেষণার নতুন ক্ষেত্র তৈরি করবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সিভাসু একটি “সেন্টার অব এক্সেলেন্স” হবে এবং কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে এটি হবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।’ তিনি সিভাসু কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার আহ্বান জানান।

হাছান মাহমুদ বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় কত বড়, সেটার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও মর্যাদা নির্ভর করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও মর্যাদা নির্ভর করে গুণগত শিক্ষা ও গবেষণাকর্মের ওপর। পৃথিবীতে অনেক ছোট ছোট বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলো শিক্ষা ও গবেষণাকর্মে খুবই ভালো।

ঢাকায় টিচিং অ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টার স্থাপন, রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে ভ্রাম্যমাণ গবেষণা তরি নির্মাণ, হাটহাজারীতে রিসার্চ অ্যান্ড ফার্ম বেইজড ক্যাম্পাস ও কক্সবাজারে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ সিভাসু অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘সিভাসুর শিক্ষার্থীরা বিদেশে যাচ্ছে এবং বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাকর্মকে সমৃদ্ধ করার জন্য এ ধরনের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

দুই দিনের সম্মেলনে মোট সাতটি টেকনিক্যাল সেশনে চারটি মূল প্রবন্ধ এবং ৫২টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। সম্মেলনে বিষয় সংশ্লিষ্ট ৫২টি পোস্টার প্রদর্শিত হয়।

আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারতসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রায় ৩০০ জন বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, পরিবেশবিদ, পেশাজীবী, এনজিও কর্মী, উন্নয়ন সহযোগী ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।