উৎকোচ নিয়ে জেলেদের ছাড়, দুই পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করা ১০ জেলেকে আটকের পর উৎকোচ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানার দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর জন্য তাঁরা ৬৫ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বরখাস্ত হওয়া দুই পুলিশ সদস্য হচ্ছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল সুমন সিকদার। আজ শনিবার এই দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বরখাস্ত হওয়া দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।

স্থানীয় জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য দেলোয়ার ও সুমন সিকদার গতকাল শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীসংলগ্ন লালখাড়াবাদ এলাকায় যান। সেখানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেশ কয়েকজন জেলে মাছ ধরছিলেন। এ সময় স্থানীয় খোকন হাওলাদার, বোরহান সরদার, কাওছার তফাদার, চাঁন মিয়া, আলাউদ্দিন ও লালু ফকিরসহ ১০ জেলেকে আটক করেন তাঁরা। পরে আটক জেলেদের পোলতাতলী ঘাটে আনা হয়। এরপর আদালতে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁদের প্রত্যেকের কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এএসই দেলোয়ার। একই সঙ্গে আটক জেলেদের পরিবারের সদস্যদের টাকার জন্য খবর দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় দুই ব্যক্তির মধ্যস্থতায় ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ১০ জেলেকে ছেড়ে দেন এই দুই পুলিশ সদস্য। কিন্তু তাঁদের জাল ও মাছ নিয়ে যান দেলোয়ার ও সুমন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মনির হাওলাদার ও জামাল হোসেন রাঢ়ি বলেন, জেলেদের পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তাঁরা দুজন মিলে ওই টাকা পুলিশ সদস্য দেলোয়ার ও সুমনকে দেন। পরে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলেরা সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিচার চেয়ে উপজেলার পোলতাতলী বাজারে বিক্ষোভ করেন। এরপরেই স্থানীয়ভাবে বিষয়টি জানাজানি হয়।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শিমুল রানী পাল জানান, মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নদীতে অভিযানে গেলে মৎস্য কর্মকর্তা সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা মৎস্য কর্মকর্তাকে না জানিয়ে মেঘনায় অভিযানে গিয়েছিলেন।