দুদক সক্রিয়, তাই সমালোচনা স্বাভাবিক: দুদক চেয়ারম্যান

‘বিশেষ তদন্তবিষয়ক যৌথ প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
‘বিশেষ তদন্তবিষয়ক যৌথ প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সক্রিয় প্রতিষ্ঠান, তাই এর সমালোচনা হবে, এটাই স্বাভাবিক। এমনটাই মনে করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ব্যক্তিগতভাবে সব সময়ই সমালোচনাকে স্বাগত জানানোর কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সমালোচনা থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণও করি। তবে সমালোচনা হতে হবে গঠনমূলক এবং বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে।’

আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ‘বিশেষ তদন্তবিষয়ক যৌথ প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। দুদক ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) যৌথ উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

সিটিটিসির প্রধান মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি, জঙ্গি অর্থায়ন, সন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা সব অপরাধই একই সূত্রে গাঁথা। সিটিটিসি যেভাবে অপরাধ ঘটার আগেই তা থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, দুদক ঠিক একইভাবে দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধের চেষ্টা করছে। দুর্নীতি ঘটার আগেই যদি তা প্রতিরোধ করা যায়, তাহলে সেটাই তো উত্তম।

পুলিশের সঙ্গে কমিশনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ঘুষের টাকাসহ ঘুষখোরদের গ্রেপ্তার করতে যেভাবে পুলিশ সাহায্য করছে, ঠিক একইভাবে গভীর রাতে দুদকের মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারেও পুলিশ সাহায্য করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুধাবন করতে হবে, আইন করা হয় তা মান্য করার জন্য, এনফোর্সমেন্ট হচ্ছে সর্বশেষ অস্ত্র। আমরা সবাই যদি আইন মানি, তাহলেই সব অপরাধ কমে আসবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি, কমিশনের সক্ষমতার কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। এটা কাটিয়ে ওঠার জন্যই কমিশনে একটি প্রশিক্ষণ অনুবিভাগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন দেশে-বিদেশে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদসহ তদন্তের প্রতিটি ধাপে পুলিশের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ। কমিশনের কর্মকর্তারা যাতে এই জ্ঞান শেয়ার করতে পারেন, তাই পুলিশের সিআইডি, সিটিটিসিসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে প্রশিক্ষণের আয়োজনও করা হচ্ছে।

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, তদন্তের দুর্বলতার কারণেই একসময় কমিশনের মামলায় বিচারিক আদালতে সাজার হার মাত্র ২২ শতাংশে নেমে এসেছিল। সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রযুক্তি নিয়মিত পরিবর্তন হয়, তাই আপডেট থাকতে হবে। লোভে না পড়লে মহৎ কিছু করা সম্ভব। আর লোভে পড়লে শুধু অর্থ পাওয়া সম্ভব। সবাই ঝুঁকি নিয়ে দেশের জন্য কাজ করছে। দুদক আর পুলিশ একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করবে, এটাই প্রত্যাশা।