বগুড়ায় ফেলে যাওয়া টাকা ফিরে পেলেন বৃদ্ধা

স্বামী আজমত উল্লাহ মারা যাওয়ার পর থেকেই সংসার চালাতে দিশেহারা হয়ে পড়েন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামের মালেকা বেগম (৬০)। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে ধারদেনা করে এবং জমি বন্দক রেখে চার বছর আগে একমাত্র ছেলে মতিয়ার রহমানকে পাঠান ইতালিতে। প্রতি মাসে ছেলের বিদেশ থেকে পাঠানো উপার্জনের টাকায় ধারদেনা ঋণ পরিশোধ ছাড়াও সংসারের খরচ চালান মালেকা।

প্রবাসী ছেলের পাঠানো দুই মাসের রোজগারের ৫৫ হাজার টাকা ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড বগুড়া শাখা থেকে গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে তুলে নজরুল ইসলাম সড়ক থেকে একটি রিকশায় উঠে শহরের ফতেহ আলী বাজারের ফটকে নেমে যান তিনি। অসাবধানতাবশত টাকাসহ হাতব্যাগটি রিকশায় ফেলে আসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, মালেকা বেগম যাওয়ার পরই হাতব্যাগটি তুলে নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়ার চেষ্টা করেন রিকশাচালক সদর উপজেলার ইছাদহ গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন। এ দৃশ্য দেখে ফেলেন সেখানে উপস্থিত অপর দুই রিকশাচালক। তাঁরা বিষয়টি ফতেহ আলী বাজার গেট এলাকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য অজিত রায়কে জানান। অজিত রায় মোফাজ্জল হোসেনকে হাতব্যাগসহ আটক করে সদর ট্রাফিক ফাঁড়িতে নেন। এরপর ব্যাগ খুলে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রসহ টাকাগুলো মেলে। অজিত রায় তাৎক্ষণিক বিষয়টি ফতেহ আলী বাজার ফটকে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনকে জানান। পরিদর্শক বিষয়টি জানান বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞাকে।

এদিকে বাজারে মাছ কেনার পর রিকশায় টাকাভর্তি ব্যাগ ফেলে যাওয়ার বিষয়টি টের পান মালেকা বেগম। বাজারের ফটকে তন্নতন্ন করে রিকশাচালকের খোঁজ করতে থাকেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত রিকশাচালকেরা মালেকা বেগমকে জানান, ফেলে যাওয়া ব্যাগসহ ওই চালককে সদর ফাঁড়িতে নিয়েছে পুলিশ। মালেকা ছুটে যান ওই ফাঁড়িতে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যাগে ৫০ হাজার টাকা ও একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। এরপর পরিদর্শক আনোয়ার মালেকা বেগমকে নেন বগুড়ার এসপির কাছে। এসপি ব্যাগসহ ৫০ হাজার টাকা মালেকা বেগমের হাতে তুলে দেন।

জানতে চাইলে বগুড়া জেলা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য অজিত রায় বলেন, ‘ব্যাগে ৫০ হাজার টাকা আর মালেকা বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছি। এর বেশি টাকা ছিল কি না, তা আমার জানা নেই।’ রিকশাচালককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অজিত রায়।