আফিফার মেডিকেলে পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তা

আফিফা খাতুন
আফিফা খাতুন

মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আফিফা খাতুনের বাড়িতে খুশির বন্যা বইছে। একই সঙ্গে তাঁর বাবার মাথায় দুশ্চিন্তা ভর করেছে। নিজের যৎসামান্য জমি ও বর্গায় অন্যের জমি চাষ করে কোনো রকমে সংসার চলে। মেয়ের পড়ার খরচ জোগাবেন কোত্থেকে!

আফিফা খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের আজিপুর গ্রামের মো. আলমের মেয়ে। এ বছর আফিফা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

তিন ভাইবোনের মধ্যে আফিফা বড়। ছোট ভাই বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ করে। ছোট বোন পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। ছোটবেলা থেকেই আফিফা পড়ালেখায় ভালো। অভাবের সংসার হলেও তিনি চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করেছেন বাবা মো. আলম। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর আফিফা রাজশাহীর নিউ ডিগ্রি সরকারি কলেজে ভর্তি হন।

মো. আলম (৬০) বলেন, ‘আমার মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে আসছে। কিন্তু আমার অত বিশ্বাস হতো না। আমরা গরিব মানুষ। আফিফা যখন জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেল, তখন আমার মনেও ছোট করে আশা জাগে। খরচের দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়েই তাকে ভর্তি করে আসি রাজশাহীর নিউ ডিগ্রি সরকারি কলেজে। সেখানকার শিক্ষকদের সহযোগিতা ছাড়া পড়ানো সম্ভব হতো না।’ 

মো. আলম আরও বলেন, ‘ভীষণ চিন্তায় পড়েছি। কোথায় টাকা পাব? বাড়িতে এখন বিক্রি করার মতো গরু-বাছুরও নেই। বড়লোক কোনো আত্মীয়স্বজনও নেই যে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার নেব। ভর্তি হতেই তো অনেক টাকা লাগবে।’

আফিফা খাতুনের ভাষ্য, ‘স্বপ্নের দ্বার প্রান্তে আসতে পেরেছি। এ জন্য অনেক বাধা পার হতে হয়েছে। কলেজশিক্ষকেরা সহযোগিতা না করলে সম্ভব হতো না। আমি স্যারদের কাছে কৃতজ্ঞ। বাবা আনন্দিত হওয়ার পাশাপাশি ভীষণ চিন্তায় আছেন খরচ নিয়ে। এ জন্য একটু খারাপও লাগছে।’

রাজশাহী নিউ ডিগ্রি সরকারি কলেজের গণিত বিষয়ের শিক্ষক এ কে নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় কলেজের অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষক আফিফাকে সহায়তা করেছেন। তাঁর বাবা গরিব কৃষক। মেডিকেলে পড়ানোর সামর্থ্য নেই।