বাবাকে হত্যা করে ৯৯৯-এ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলের ফোন

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল দিয়ে জানান বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া একমাত্র ছেলে। পরে তাঁকে আটক করে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামে।

নিহত আবদুল ওয়াদুদ ওরফে বাবুল মাস্টার (৫৫) পাশের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও কোহিনুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি লতিফপুর এলাকার তোতা মার্কেটে ওষুধের ব্যবসা করতেন। দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়ে তিনি কৃত্রিম পায়ে চলাফেরা করতেন।

ছেলের নাম ইমরান হাশমি ওরফে রাতুল (২৫)। তিনি ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি মা–বাবার একমাত্র ছেলে। তাঁর একটি বোন আছে।

রাতুলের স্বজনেরা জানান, রাতুল ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেছেন। পরে তিনি ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উত্তরা শাখায় ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। ছেলেকে নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত টাকা ছেলের হাতে দিতেন না বাবা। ছেলে বেশ কয়েক বছর ধরে বাবার কাছে হাতখরচ ও বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণের জন্য বাড়তি টাকা চাইতেন। বাবা মাঝেমধ্যে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হতো।

গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলে, ‘রাতুল প্রায়ই গভীর রাতে রাস্তাঘাটে চুপচাপ বসে থাকত। মাঝে মাঝে তাঁর বাবা আমাকে ফোন করে বাড়িতে নিয়ে যেতেন। আমি ছেলেকে বুঝিয়ে শুনিয়ে দিয়ে আসতাম। রাতুল মাদকাসক্ত ছিল না। তবে ইচ্ছেমতো টাকা না পেয়ে সে প্রায়ই হতাশ থাকত।’ তিনি আরও বলেন, রাতুল প্রায়ই এসব বিষয় নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতেন। তাদের গায়ে হাত তুলতেন। মা তাঁর ছেলের ভয়ে এক বছর ধরে বাবার বাড়িতে গিয়ে থাকেন। বাড়িতে শুধু বাবা আর ছেলে থাকতেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, গতকাল সোমবার রাত একটার দিকে ছেলে তাঁর বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে তিনি নিজেই ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। শ্রীপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেকে আটক করে। গুরুতর অবস্থায় বাবাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।