গৃহবধূকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় গৃহবধূ আরতি রানী মহন্তুকে (৩৫) অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জয়পুরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আক্কেলপুর উপজেলার মারমা পূর্বপাড়া গ্রামের সোহেল তালুকদার (২৭), দেওড়া সোনারপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেন (৫০), দেওড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রাম) রাহিম ওরফে রাহিন (২৪), দেওড়া সাখিদারপাড়ার ফেরদৌস আলী সাখিদার (৪৪), দেওড়া সোনারপাড়া গ্রামের মজিবর রহমান (৪৪), জগতি গ্রামের রুহুল আমিন ওরফে রুহুল (৩৭) ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রাম) আজিজার রহমান (৫২)।

মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি সোহেল তালুকদার ও ফেরদৌস আলীকে পাঁচ লাখ টাকা করে এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি পাঁচ আসামির প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফিরোজা বেগম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এ রায়ে খুশি হয়েছি। এটি জয়পুরহাট জেলার একটি যুগান্তকারী রায়। এ রায়ে সমাজ থেকে এমন অপরাধপ্রবণতা কমে যাবে।’

মামলার বিবরণে জানা গেছে, আরতি রানী মহন্ত দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর স্বামী উজ্জল মহন্ত ও বড় ছেলে উৎপল মহন্ত চট্টগ্রামে কাজ করেন। ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর রাত আনুমানিক আটটার সময় আরতি রানী মহন্ত ও তাঁর মেয়ে অর্চনা রানী মহন্ত খাওয়াদাওয়া করে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। ওই দিন রাত নয়টার দিকে আরতি রানী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে যান। এ সময় আরতি রানীকে কয়েকজন লোক জোর করে তুলে নিয়ে যান। রাত ১০টার দিকে বাড়ির অদূরে পোড়া পুকুরপাড়ের ধানখেতে আরতি রানীকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরতি রানী মারা যান।

এ ঘটনায় আরতি রানীর স্বামী উজ্জল মহন্ত বাদী হয়ে ১০ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আক্কেলপুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধনী ২০০৩)–এর ৯ (৩) ধারায় মামলা করেন। এর মধ্যে তিনজন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ঘটনার তিন বছর পর আজ এই রায় ঘোষণা করা হয়।