নিরাপনের তদারকি কার্যক্রমে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

উত্তর আমেরিকাভিত্তিক তৈরি পোশাক কারাখানা পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান নিরাপনের কারখানার নিরাপত্তা পরিদর্শন কার্যক্রমের ওপর ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সম্পূরক এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্সের সদস্য প্রায় ৬০০ তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ তদারক করতে গত এপ্রিলে নিরাপন নামের ওই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। এটি মূলত বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডের একটি উদ্যোগ।

অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম নিয়ে ২০১৭ সালে রিট করে ড্রাগন সোয়েটার লিমিটেড। এর ধারাবাহিকতায় নিরাপনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে সম্পূরক আবেদনটি করে ড্রাগন।

আদালতে আবেদনকারীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

হাইকোর্ট নিরাপনের নিরাপত্তা পরিদর্শন কার্যক্রমের ওপর ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন বলে জানান ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিরাপত্তা পরিদর্শন ও প্রশিক্ষণের নামে দেশের কোনো পোশাক কারাখানার কাছ থেকে অর্থ নেওয়া এবং বিজিএমইএর পরামর্শ ও সহযোগিতা ছাড়া নিরাপনের সব ধরনের নিরাপত্তা তদারকি কার্যক্রমে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে নিরাপন দেশের পোশাক কারাখানাগুলোর নিরাপত্তা তদারকি ও পরিদর্শন করতে পারবে না।

রেডিমেড গার্মেন্টস খাতের নিরাপত্তা তদারকি ও অভিন্ন মানদণ্ড নির্ধারণের জন্য প্রস্তাবিত আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিলে (আরএসসি) অ্যালায়েন্সের উত্তরসূরি নিরাপনের যুক্ত হতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান ইমতিয়াজ মইনুল।

যুক্তি সম্পর্কে আবেদনকারীর এই আইনজীবীর ভাষ্য, এত দিন অ্যালায়েন্স ও অ্যাকর্ড অর্থ ছাড়াই কারাখানা পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। আর রেডিমেড গার্মেন্টস খাতের নিরাপত্তা তদারকি ও অভিন্ন মানদণ্ড নির্ধারণের জন্য আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল গঠিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে সরকার, আইএলও, বিজিএমইএ, শ্রমিক সংগঠন ও ইউরোপীয় ক্রেতা জোট সংগঠন অ্যাকর্ড কাজ করছে। এতে নিরাপন যুক্ত হতে পারে, কিন্তু তা করে পরিদর্শনের নামে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। শিগগিরই আরএসসির কার্যক্রম শুরু হবে। তখন দ্বৈত পরিদর্শনের ফলে তৈরি পোশাক কারাখানাগুলো হয়রানির মুখে পড়বে—এসব যুক্তিতে সম্পূরক আবেদনটি করা হয়।

রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে পাঁচ বছরের জন্য অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। ক্রেতাদের এই জোটের অধীনে বৈদ্যুতিক, অগ্নি ও ভবনের কাঠামোগত ত্রুটি পরিদর্শনের পর সংস্কারকাজ করে ৬৫২ পোশাক কারখানা। কারখানাগুলোর সংস্কারকাজ শেষ হয় ৯৪ শতাংশ।

গত ডিসেম্বরে অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ থেকে তাদের কার্যক্রম গোটায়। আর চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল নিরাপনের যাত্রা শুরু হয়। সেদিন এক অনুষ্ঠানে নিরাপনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কারখানার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করবে নিরাপন। নিরাপন মান নিয়ন্ত্রণ করবে। কারখানা পরিদর্শনে প্রাপ্ত ফলাফলও পর্যালোচনা করবে। ৬০ দিন অন্তর অন্তর কারখানার বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।