যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে এসআইসহ আটক ২

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকায় যুবক এজাহার মিয়াকে (২৭) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) দুজনকে আটক করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভাটিয়ারী থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক দুজন হলেন জেলা পুলিশে প্রেষণে কর্মরত এসআই ইকবাল পারভেজ ওরফে রায়হান ও তাঁর ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান।

নিহত এজাহার মিয়া উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের (বালু রাস্তা এলাকা) বাসিন্দা। তিনি সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন জাহাজভাঙা কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁর দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

আজ সকালে ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সামনে থেকে পুলিশ এজাহারের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এজাহারকে হত্যা করা হয়েছে জানিয়ে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক ওবায়দুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত এজাহারের ডান পায়ে ক্ষতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর এসআই ইকবালের বোন শারমিনের একটি মুঠোফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁরা। পরে এজাহারকে সন্দেহ করে তাঁর ভোটার আইডি কার্ড নেন এসআই ইকবাল। এক সপ্তাহ আগে বিষয়টি মীমাংসা করতে এজাহারকে নিয়ে ভাটিয়ারী ইউপির চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের কাছে যান তিনি। পরে চেয়ারম্যান তাঁদের থানায় গিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেন।

নিহত এজাহার মিয়ার শাশুড়ি মরিয়ম বেগমের অভিযোগ, সোমবার রাত নয়টার দিকে ভোটার আইডি কার্ড ফেরত দেওয়ার কথা বলে এজাহারকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান ইকবাল। বাড়িতে নিয়ে ইকাবলের বোন শারমিন ও তাঁর ভাই আরমান গাছের সঙ্গে এজাহারকে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। রাত দুইটার দিকে ইকবাল নিজেও এজাহারকে মারধর শুরু করেন। মরিয়ম বেগম ও তাঁর স্বামী বারবার বাধা দিলেও ইকবাল ও তাঁর ভাইবোনেরা কথা শোনেননি। সারা রাত পেটানোর পর সকালে এজাহারের মুখে কয়েক বালতি পানি ঢালেন তাঁরা। এরপর সাদা রঙের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কারে এজাহারকে মুমূর্ষু অবস্থায় ভাটিয়ারী রেলসেতু এলাকায় এনে একটি রিকশা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন এসআই ইকবাল।

মরিয়ম বেগম বলেন, বাড়ি থেকে স্থানীয় বিএসবি হাসপাতালে আনার পর এজাহারকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার দিকে তাঁরা লাশটি ভাটিয়ারী ইউপিতে নিয়ে যান। এ সময় স্থানীয় ব্যক্তিরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম শেখ বলেন, ইকবাল পারভেজের বিরুদ্ধে নিহত যুবকের পরিবার হত্যার অভিযোগ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইকবাল পারভেজ ও তাঁর ভগ্নিপতি মিজানুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।