এমপিওভুক্ত দাবিতে শিক্ষকদের কর্মসূচি স্থগিত

এমপিওভুক্ত দাবিতে বেশ কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন এমপিওভুক্ত নয় এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। প্রথম আলো ফাইল ছবি
এমপিওভুক্ত দাবিতে বেশ কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন এমপিওভুক্ত নয় এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। প্রথম আলো ফাইল ছবি

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিত করেছেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। আজ মঙ্গলবার রাতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের বৈঠকের পর শিক্ষক নেতাদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান মন্ত্রী। মন্ত্রীর বাসায় এই বৈঠক হয়।

আন্দোলনকারী নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, এবার তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত হয়ে গেছে। যেটি কাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করবেন। এর পরে নীতিমালা সংশোধন করার জন্য কমিটি করা হবে, যেখানে তাদেরও রাখা হবে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করবেন। এমন প্রেক্ষাপটে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন। কারণ তারা মনে করছেন, দীর্ঘ নয় বছর পর এমপিওভুক্তি হচ্ছে। এতে হয়তো তাঁদের কারও কারও প্রতিষ্ঠান বাদ যাবে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান হবে। এ অবস্থায় শিক্ষকেরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেই কথা তারা বিবেচনা করেছেন।

এমপিওভুক্ত নতুন নীতিমালা বাতিল করে পুরোনো নিয়মে স্বীকৃতি পাওয়া সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রথমে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে গত দুদিন ধরে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন তাঁরা।

এর আগে আজ দুপুরের পর রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী জানান, কাল বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্ত ঘোষণা দেবেন। তবে এমপিওভুক্ত সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে গত জুলাই থেকে। এর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছে।

তবে কতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সর্বশেষ যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল, তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান এবার এমপিওভুক্ত হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।

এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসে বেতনের মূল অংশ ও কিছু ভাতা পেয়ে থাকেন। এমপিওভুক্ত দাবিতে ২০১০ সালের পর থেকেই থেমে থেমে আন্দোলন করে আসছেন এমপিওভুক্ত নয়, এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

আজকের মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যোগ্য বিবেচিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির বাইরে থাকবে না। এখন থেকে প্রতিবছরই যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে সেগুলো নিয়মিত তদারক করা হবে। যদি পরে শর্ত পূরণ না করে, তাহলে এমপিও স্থগিত করা হবে।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।