ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় লেগুনায় খুন হন চিকিৎসক শাহ আলম

এই লেগুনাতেই খুন করা হয় চিকিৎসক শাহ আলমকে। ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস
এই লেগুনাতেই খুন করা হয় চিকিৎসক শাহ আলমকে। ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস

হাতে থাকা ব্যাগ ছিনতাইকারীদের দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণেই খুন করা হয় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ মো. শাহ আলমকে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিপলু কুমার দের আদালতে এই জবানবন্দি দেন লেগুনাচালক মো. ফারুক (১৯)।

এর আগে আজ ভোরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকা থেকে ফারুককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবের একটি দল। গ্রেপ্তার ফারুক চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলীর ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবি চরণ চৌহান প্রথম আলোকে বলেন, লেগুনায় করে চিকিৎসক শাহ আলম চট্টগ্রাম নগরে যাচ্ছিলেন। লেগুনাটিতে তিনি ছাড়াও ছিনতাইকারী চক্রের আরও পাঁচ সদস্য যাত্রীবেশে ছিলেন। ফারুক ছিলেন চালকের আসনে। গাড়িতে থাকা পাঁচজন শাহ আলমকে একা পেয়ে তাঁর হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ব্যাগটি না ছাড়ায় একপর্যায়ে তাঁদের একজন শাহ আলমকে ছুরিকাঘাত করেন।

এর আগে ছোট কুমিরা বাজারের সব কটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গতকাল সোমবার বিকেলে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লেগুনাটি জব্দ করেন র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় তাঁরা লেগুনাটিতে রক্তের ছোপ দেখতে পান।

র‌্যাব-৭–এর উপ-অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে লেগুনাটি গ্যারেজে রাখতে যান ফারুক। এ সময় খুনে অংশ নেওয়া একজন ফারুককে ফোন করে গাড়ি নিয়ে সীতাকুণ্ডে যেতে বলেন। কথা অনুযায়ী গাড়ি নিয়ে সীতাকুণ্ডে গেলে আরও তিনজন যোগ দেন। রাত নয়টার দিকে তাঁরা চট্টগ্রাম নগরের উদ্দেশে রওনা হন। ছোট কুমিরা বাজার এলাকায় এলে আরও দুই সদস্য লেগুনায় ওঠেন। লেগুনাটি রয়েল সিমেন্ট গেট এলাকায় পৌঁছালে চক্রটির একজন শাহ আলমের কাছ থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তাঁদের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসক শাহ আলমকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে ঘাতকেরা চট্টগ্রাম নগরের দিকে না গিয়ে লেগুনাটি ঘুরিয়ে সীতাকুণ্ডের দিকে রওনা হন। কুমিরা বাইপাস এলাকায় আসার পর নির্জন জায়গায় শাহ আলমের লাশ ফেলে দেওয়া হয়। পরে বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে গাড়ি ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ধুয়ে ফেলেন।

গত শুক্রবার পুলিশ নিহত শাহ আলমের লাশ উদ্ধার করে। পরদিন শনিবার রাতে নিহত চিকিৎসকের স্ত্রী ওমরানা আজমেরী সিকদার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। শাহ আলম সীতাকুণ্ডের ছোট কুমিরা বাজারে বেবি কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি ক্লিনিক চালাতেন।