মৃত্যুর আগে পানি চেয়ে পাননি আবরার

আবরার ফাহাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবরার ফাহাদ। ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর আগে পানি চেয়েছিলেন বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ। কক্ষে উপস্থিত কেউ কেউ পানি দিতে চেয়েছিলেন। নিথর হওয়ার আগে হাসপাতালেও নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠদের চাপে তাঁরা কিছু করতে পারেননি।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার এস এম নাজমুস সাদাত। তিনি আদালতকে আরও বলেছেন, আবরারকে মারধরে তিনি অংশ নেননি। নাজমুস সাদাত ও আবরার দুজনই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন মামলা করেন আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ। নাজমুস সাদাত এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তাঁকে ১৫ অক্টোবর দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, সাদাত আদালতকে বলেন, আবরারকে তাঁর কক্ষ থেকে ২০১১ নম্বরে ডেকে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন বুয়েটের ১৬তম ব্যাচের মনিরুজ্জামান মনির। কক্ষে আসার পর ১৫ ও ১৬তম ব্যাচের ছাত্র ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ ওরফে সকাল, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ ও মনিরুজ্জামান মনির ক্রিকেটের স্টাম্প ও মোটা রশি দিয়ে বেধড়ক পেটান আবরারকে।

আবরারকে যখন উপর্যুপরি মারধর করা হচ্ছিল, তখন তিনি বারবার পানি চাইছিলেন। কিন্তু তাঁকে এক ফোঁটা পানি দেওয়ারও অনুমতি জ্যেষ্ঠরা তাঁদের দেননি। একপর্যায়ে আবরার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরা তখন আবরারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সে কথাও জ্যেষ্ঠরা কানে তোলেননি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি (নাজমুস সাদাত) নিজের কক্ষে চলে আসেন বলে জবানবন্দিতে দাবি করেন।

আদালত নাজমুস সাদাতের জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এই নিয়ে আবরার হত্যা মামলায় আটজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। তাঁরা হলেন অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ, মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, মেফতাহুল ইসলাম, মুজাহিদুল, মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ও এ এস এম নাজমুস সাদাত।