সরকারি রাস্তা দখল করে কলা চাষ

পোরশার সহড়ন্দ-আমনারায়ণপুর রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে লাগানো হয়েছে কলাগাছ। ছবিটি গত রোববারের।  প্রথম আলো
পোরশার সহড়ন্দ-আমনারায়ণপুর রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে লাগানো হয়েছে কলাগাছ। ছবিটি গত রোববারের। প্রথম আলো

নওগাঁর পোরশা উপজেলার সহড়ন্দ গ্রামে একটি রাস্তা স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে কলাগাছ লাগিয়েছেন। এতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গ্রামের কয়েক শ মানুষ চরমে দুর্ভোগে পড়েছেন। পাশাপাশি যানবাহন চলাচল না করতে পারায় গ্রামবাসী কৃষিপণ্য বা অন্যান্য মালামালও পরিবহন করতে পারছেন না।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সহড়ন্দ গ্রামের আদিবাসী পাড়ার সহড়ন্দ-আমনারায়ণপুর রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অধীন। এটি সহড়ন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সহড়ন্দ আদিবাসী পাড়ার প্রায় ৩০টি পরিবার ও আমনারায়ণপুর গ্রামের কয়েক শ মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা। ১৬ অক্টোবর সহড়ন্দ গ্রামের আকবর আলী নামের এক ব্যক্তি রাস্তাটির ওপর কলাগাছ লাগিয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেন।

গত শনিবার দেখা গেছে, ৬ ফুট প্রস্থের রাস্তাটির প্রায় ৪ ফুট এবং দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০০ ফুট অংশ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বেড়ার ভেতরে রাস্তার ওপরে কালাগাছ লাগানো হয়েছে। বেড়ার বাইরে রাস্তার সরু অংশ দিয়ে একটি সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়াও কষ্টকর।

সহড়ন্দ গ্রামের আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা বিজয় কিসকু বলেন, তিনি ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। রাস্তাটি বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়ায় বাড়িতে ভ্যান নিতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে সারা দিন ভ্যান চালানোর পর পাশের গ্রামে অন্য মানুষের বাড়িতে তাঁর ভ্যানটি রাখতে হচ্ছে। গ্রামের রাজীব মুর্মু বলেন, ‘বেড়া দিয়ে রাস্তা ঘিরে দেওয়ায় ভ্যান-ভুটভুটি হামাগের পাড়াত ঢুকতে পারোছে না। এ জন্য খ্যাতের ফসল বাড়িত তুলতে ম্যালা কষ্ট হছে। রাস্তার বেড়া দেওয়া জায়গায় ভ্যানত করে খ্যাতের ফসল অ্যানে সেখান থ্যাকে আবার হাতে কিংবা মাথায় করে বাড়িতে ফসল অ্যানতে হছে। অথচ এই রাস্তা দিয়ে হামরা জন্মের পর থ্যাকে চলাচল করোছি।’

সহড়ন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তাটি পাকা করার কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ রাস্তাটি দখল করে বেড়া দেওয়ায় এখন আমরা চিন্তিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করতে এখন কষ্ট হচ্ছে।’জানতে চাইলে আকবর আলী দাবি করেন, এই রাস্তা তাঁদের জমির ওপর দিয়ে চলে গেছে। এটা সরকারি রাস্তা নয়। মাপজোখ করে তিনি তাঁর জায়গা বের করে নিয়েছেন।

তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম শাহ্ বলেন, রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের। ইউএনও বিষয়টি সম্পর্কে জানেন। গত রোববার ইউএনও তাঁকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। শিগগিরই গ্রামবাসী ও দখলদার ব্যক্তির সঙ্গে বসে এর সুরাহা করা হবে।

ইউএনও নাজমুল হামিদ রেজা বলেন, রাস্তাটি সরকারি হলে কোনোভাবে তা দখল করতে দেওয়া হবে না।