২২ বছরেও ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অবস্থান

তারেক উজ জামান।  ছবি: প্রথম আলো
তারেক উজ জামান। ছবি: প্রথম আলো

৭৩ শতক জমি। পৈতৃক সূত্রে ওই জমিটুকুই পাওয়ার কথা ছিল নাটোরের লালপুরের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা তারেক উজ জামানের (৪৫)। কিন্তু এর আগেই উপজেলা পরিষদের অবকাঠামো উন্নয়নের সময় এ জমি অধিগ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু গত ২২ বছরেও তিনি পুরো ক্ষতিপূরণ পাননি। এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশও মানছে না জেলা প্রশাসন। এ অবস্থায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে তারেক প্ল্যাকার্ড নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ‘মহামান্য আদালতের রায়ের বাস্তবায়ন চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে যান তারেক। সাংবাদিকদের জানান, ২২ বছর আগে দখল হওয়া জমির এখনো পুরোপুরি ক্ষতিপূরণ দেয়নি জেলা প্রশাসন। মাঝে তাঁর মা-বাবা মারা গেছেন। নিজেও বিয়ে করেছেন। ঘরে এসেছে দুই সন্তান। এলাকায় মালামাল মজুতের ব্যবসার আয় দিয়ে চলে সংসার।

জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও তারেকের সঙ্গে কথা বলতে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা আসেননি। পরে সাংবাদিকদের তারেক বলেন, ১৯৯৭ সালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সরকার তাঁর বাবা রবি উজ জামানের বৈদ্যনাথপুর মৌজার ২৮২ ও ২৮৩ দাগের ৭৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করে। এর ৮ বছর পর ২০ শতক জমির জন্য ২৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু বাকি ৫৩ শতক জমির দাম এখনো অপরিশোধিত। জমির বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী বাকি টাকা পেতে তিনি বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঘুরলেও কাজ হয়নি। পরে বাবার মৃত্যুর পর ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তারেক।

তারেক বলেন, ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সরকারকে ওই জমির মূল্য পরিশোধের নির্দেশ দেন। অন্যথায় মালিককে জমি ফেরত দেওয়ার কথাও বলা হয়। আদালতের নির্দেশের পরও জমির দাম না পেয়ে এবার জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার শাস্তি চেয়ে আবেদন করেন তিনি। জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেন অবমাননার অভিযোগ গঠন করা হবে না, সে মর্মে কারণ দর্শানোরও নোটিশ দেন আদালত। কিন্তু এরপরও জমির দাম পরিশোধ করেনি জেলা প্রশাসন।

তারেক আরও বলছিলেন, ২২ বছর ধরে বিভিন্নজনের দ্বারস্থ হয়েছে তাঁর পরিবার। সবশেষ আদালতের দুই দফা নির্দেশনার পরও ফল না পাওয়ায় প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরিফুন্নেছা বলেন, আদালত অবমাননার নোটিশ পাওয়ার পর অর্থ বরাদ্দের জন্য উচ্চপর্যায়ে আবেদন করে টাকা পাওয়া গেছে। অধিগ্রহণের কাজ শেষে অল্প দিনের মধ্যে মালিককে ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।