হত্যা মামলায় স্কুলশিক্ষক ছোট ভাই গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় থাকার ঘর থেকে এক কৃষকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরের দিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এই ঘটনার ১৯ দিন পর নিহতের ছোট ভাইকে আটক করেছে পুলিশ। এরপর ওই হত্যা মামলায় আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম রমজান আলী সরকার (৪৮)। তিনি নিহত মহসিন সরকারের ছোট ভাই। তাঁদের বাবার নাম আইয়ূব আলী সরকার। রমজান আলী পাখির চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ভালুকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঝালপাঁজা গ্রামের নন্দিপাড়া এলাকার পৈতৃক পুরোনো বাড়িতে মহসিন সরকার একাই থাকতেন। তাঁর স্ত্রী এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে থাকেন। গত ৩ অক্টোবর দুপুরের দিকে গোয়াল ঘরে গরুর ডাক শুনে পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি মহসিনের বাড়িতে যান। সেখানে কাউকে না পেয়ে মহসিনের থাকার ঘরের দরজা কিছুটা খোলা পেয়ে ভেতরে ঢুকে দেখেন, খাটের ওপর মহসিনের হাত পা-বাঁধা, গলায় নামাজের রুমাল প্যাঁচানো। এই বিষয়টি আশপাশের বাসিন্দাদের জানান তিনি। পরে ভালুকা মডেল থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠান। পরের দিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন ভালুকা মডেল থানায়। এই ঘটনার ১৯ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিহতের ছোট ভাই রমজানকে আটক করে পুলিশ। এর আগে পুলিশ আরেক ব্যক্তিকে আটক করেছিল। তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে রমজান আলীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত আগামী সোমবার এই রিমান্ড আবেদনের শুনানি করবেন। তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঠিক তথ্য উদ্‌ঘাটনে চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আরও কিছু তথ্য জানা যাবে।

লাশ উদ্ধারের দিন ওই বাড়িতে রমজান আলী বলেছিলেন, তাঁরা চার ভাই। দুই ভাই বিদেশে থাকেন। তিনি অন্যত্র পরিবার নিয়ে থাকেন। সবার বড় ভাই মহসিন একাই এই বাড়িতে থাকতেন। রমজান আলী তাঁর জমির খড়ও বিক্রি করতেন না, বড় ভাই মহসিনের গরুর খাবারের জন্য রেখে দিতেন। তাঁদের ছোট তিন ভাইকে পড়া-লেখার খরচ দিয়েছেন বড় ভাই মহসিন। রমজান সেদিন দাবি করেন, কারও সঙ্গে তাঁর ভাই মহসিনের কোনো শত্রুতা ছিল না। একেবারে সহজ সরল জীবন-যাপন করতেন।

লাশের সুরতহাল করা কর্মকর্তা জীবন চন্দ্র বর্মণ জানান, লাশের গলায় কাপড় প্যাঁচানো ছিল। হাত-পা আলাদা আলাদা করে বাঁধা ছিল। তবে শরীরের মধ্যে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি ধারণা করছেন, বালিশ চাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।