রায়পুরায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রায়পুরার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে বুধবার বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত যুবকের নাম শফিকুল ইসলাম (৩০)। তিনি শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের কুন্দারপাড়ার খুরশেদ মিয়ার ছেলে। নরসিংদী শহরের ইনডেক্স প্লাজায় শফিকুলের মোবাইল ফোনের ব্যবসা ছিল।

স্থানীয়রা জানান, শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নেওয়ার সময় কে বা কারা শফিকুলকে হত্যা করেছে।

নিহত শফিকুলের স্ত্রীর নাম রহিমা আক্তার (১৯)। তিনি শিবপুর শহীদ আসাদ কলেজের ছাত্রী ও নরসিংদীর সদরের চরাঞ্চল করিমপুরের শ্রীনগরের শামীম মিয়ার মেয়ে। রহিমার পরিবার আমিরগঞ্জের হাসনাবাদ গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কলেজে ভর্তির সময় রহিমার সঙ্গে শফিকুলের পরিচয় হয়। এরপর চলতি মাসের ২ তারিখে রহিমাকে নরসিংদীর একটি কাজি অফিসে এনে জোরপূর্বক বিয়ে করেন শফিকুল ইসলাম। তবে বিয়ের সপ্তাহ পার না হতেই রহিমার পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শফিকুল। এই নিয়ে দুজনের সম্পর্ক তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছালে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন রহিমা। বুধবার দুপুরে একদল যুবকসহ শফিকুল ইসলাম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন। এরপর রহিমাকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই কোনো এক মুহূর্তে কে বা কারা শফিকুলকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।

রহিমা আক্তার বলেন, ‘বুধবার দুপুরে অনেক লোকজন নিয়ে আমাদের ঘরে ঢুকে যায় শফিকুল। শফিকুল আমাকে বলে, চুপচাপ তার সঙ্গে গেলে কেউ মারবে না। পরে আমার চুল ধরে টেনে সে বাইরে নিয়ে যায়। এ সময় খুব জোরে কিছু একটা ফোটার শব্দও শুনতে পাই। এরপর আমাকে কে উদ্ধার করেছে, আর তারই–বা এই অবস্থা কীভাবে হয়েছে, সেসব বিষয়ে আমি আর কিছুই বলতে পারি না।’

নিহত শফিকুলের বাবা জানান, তাঁদের বিয়ে–পরবর্তী সমস্যাগুলো নিয়ে এলাকায় সালিস হয়েছিল। তবে সে সময় সমস্যার সমাধান হয়নি। তিনি দাবি করেন, ‘আমার ছেলেকে ওই মেয়ের পরিবারের লোকজনই এভাবে হত্যা করেছে।’

আমিরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিনহাজুল ইসলাম বলেন, কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রহিমাসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।