আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নুসরাত হত্যার রায়

বিবিসি, আল জাজিরা, এএফপি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নুসরাত হত্যার রায়ের খবর।
বিবিসি, আল জাজিরা, এএফপি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নুসরাত হত্যার রায়ের খবর।

ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার রায়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ খবর গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি, আল জাজিরাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নুসরাত হত্যার খবর প্রকাশিত হয়েছে।

নুসরাত হত্যায় রায়ের খবরটি বিবিসি অনলাইনে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়। একাধিক ছবি দিয়ে বিবিসিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় নুসরাতকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাজা শোনার পর আদালতে আসামিদের কান্না ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। একই সঙ্গে বাংলাদেশে নারীদের যৌন হয়রানি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। অ্যাকশন এইডের তথ্যের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে ৮০ ভাগ নারী কর্মী যৌন নির্যাতন বা হয়রানির শিকার হয়েছেন। নুসরাত হত্যাকাণ্ডকে বর্বর বলে অভিহিত করেছে এএফপি। বাংলাদেশের কিশোরীকে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থাটি।
নুসরাত হত্যায় ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্সও।

নুসরাত হত্যার রায়ের খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা। নুসরাত হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভের ছবি প্রকাশ করেছে তারা। চিকিৎসাধীন নুসরাতের ‘শেষনিশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করে যাব’ বলে বক্তব্যের উল্লেখও করেছে আল জাজিরা।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামীম ও মহি উদ্দিন শাকিল।