শ্রমিক লীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যায় গ্রেপ্তার হয়নি প্রধান আসামি

শ্রমিক লীগ নেতা ওমর ফারুক।  ফাইল ছবি
শ্রমিক লীগ নেতা ওমর ফারুক। ফাইল ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে শ্রমিক লীগ নেতা ওমর ফারুককে দুই হাত কেটে হত্যার ঘটনার এক বছর পেরোল আজ। এ সময়ে মূল আসামি অপর শ্রমিক লীগ নেতা সুমন মিয়া গ্রেপ্তার হননি। এ নিয়ে আক্ষেপ, আতঙ্ক আছে ফারুকের পরিবারে।

গত বছরের ২৫ অক্টোবর সকালে শ্রীপুর পৌর এলাকার মসজিদ মোড়ে প্রকাশ্যে দুই হাত কেটে হত্যা করা হয় ওমর ফারুককে। এই ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। সুমনসহ তিন আসামি পলাতক।

গতকাল বৃহস্পতিবার ফারুকের বাবা হাফিজুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অথচ এখনো মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সন্তানকে তো আর পাব না, খুনিদের বিচার হলে কিছুটা স্বস্তি পেতাম।’ তিনি জানান, প্রথম দিকে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যতটা তৎপর ছিল, ততটা তৎপর থাকলে এত দিন মূল আসামি গ্রেপ্তার হয়ে যেতেন।

ফারুকের ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম বলেন, তাঁদের পুরো পরিবার এখনো আতঙ্কে আছে। তাঁর ভাইয়ের কয়েকজন হত্যাকারী এখনো পলাতক। তাঁরা (আসামিরা) তাঁদের পরিবারের ক্ষতি করতে পারেন। আসামিরা গ্রেপ্তার ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত আতঙ্ক কাটবে না।

 শ্রীপুর পৌর শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুকের সঙ্গে দলটির আরেক নেতা সুমনের বিরোধ ছিল। হত্যাকাণ্ডের বছরখানেক আগে সুমনকে পিটিয়েছিলেন ফারুক। এরপর থেকে ফারুককে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন সুমন। ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মসজিদ মোড় এলাকায় দুটি পিকআপ ভ্যানে করে ১৫-২০ যুবক এসে ফারুককে তুলে নেয়। একটু দূরে কড়ইতলা কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নামিয়ে ফারুকের দুই হাত কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করেন সুমন। একটি হাত স্কুলের ফটকের ভেতর ও অপর হাত ফটকের বাইরে ফেলে রাখা হয়। সশস্ত্র মহড়া দিতে দিতে দক্ষিণ দিকের সড়ক ধরে চলে যায় হামলাকারীরা। এ সময় আশপাশে প্রচুর লোকজন থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

ফারুকের বাবা সেদিন দাবি করেছিলেন, মাওনা চৌরাস্তা আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমনকে প্রধান আসামি করে তিনি মামলা করেছেন।

এই বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জুবায়ের আহমেদ বলেন, ওমর ফারুক পৌর শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনায় এখনো প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়াটা দুঃখজনক। অচিরেই এ ঘটনার মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।

গতকাল দুপুরে শ্রীপুর থানা থেকে জানানো হয়, মামলাটি এখন জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের কাছে আছে। তারা তদন্ত করছে।

এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজীব কুমার দাস জানান, তিনি সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছেন। এই মামলার ব্যাপারে খোঁজ নেবেন। আসামিদের ধরতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।