শেষ মুহূর্তে আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন স্থগিত

রাষ্ট্রপতির নিয়োগ দেওয়া উপাচার্য, সহ উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ ছাড়াই আগামীকাল রোববার সমাবর্তনের আয়োজন করেছিল আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স ও টেকনোলজি। কিন্তু বিষয়টি আজ বিকেলে শেষ মুহূর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানার পর সেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।

আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. সোহরাব হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, এই সমাবর্তন স্থগিত করা হয়েছে।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেন, এখন সমাবর্তনের নতুন তারিখ ঠিক করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অর্জিত ডিগ্রির সনদে মূল স্বাক্ষরকারী হবেন উপাচার্য। আর সমাবর্তনেই মূল সনদ দেওয়া হয়। কিন্তু আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে শীর্ষ এই তিন পদে আচার্য ও রাষ্ট্রপতি চলতি দায়িত্বও কাউকে দেননি। এ অবস্থায় সমাবর্তন আয়োজন করায় এই সমাবর্তনের মাধ্যমে অর্জিত সনদ প্রশ্নের মুখে পড়ে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন বাণিজ্যমেলার মাঠে আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টায় এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তাতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল।

শীর্ষ তিন পদ শূন্য রেখে সমাবর্তন করা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই সমালোচনা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে কাজী শরিফুল আলমকে উপাচার্য হিসেবে পরিচয় করে দেওয়া আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক কোষাধ্যক্ষ। তাঁকে উপাচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেরাই তাঁকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছে। যা আইন সম্মত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত কেউ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হওয়ার সুযোগ নেই। এই তিন পদে নিয়োগ দিতে পারেন একমাত্র রাষ্ট্রপতি।

আজ দুপুরের পর বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁরা উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তাঁরা ভেবেছিলেন সমাবর্তনের আগেই নিয়োগ হয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য নিয়োগের প্রস্তাব মাস দেড়েক আগে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে দুই মাসেরও বেশি আগে। কিন্তু এখনো নিয়োগ হয়নি।

গত ২২ অক্টোবর ইউজিসি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ শূন্য রয়েছে সেগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে নিয়োগ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে ইউজিসি। এর মধ্যেই শীর্ষ তিন পদ ছাড়া একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন উঠে।