লালমিনরহাটে আ. লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষে আহত ১২

লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ১২ নেতা–কর্মী। জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার চত্বরে শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার আগে ওই চত্বরে স্থানীয় দুই প্রভাবশালী নেতার কর্মী–সমর্থকেরা এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

আহত ১২ জনের মধ্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম (৩২), সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিদুল ইসলাম (৪২), ৭ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক (৫০) ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক হোসেনকে (২৬) গুরুতর আহত অবস্থায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের একই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় অংশ নিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নেতা–কর্মীরা জেলা পরিষদ কাম কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকছিলেন। এ সময় ওই চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁদের কর্মী–সমর্থকেরা। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। পরে তাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলার জন্য মতিয়ার রহমান ও গোলাম মোস্তফার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

পরে এ ব্যাপারে বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘কিছু ঘটনা আমাদের ব্যথিত করে। বর্ধিত সভায় কোনো সংঘর্ষ বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঘটেছে বাইরে। এটা অনুপ্রবেশকারীদের বা অন্য কোনো মহলের ইন্ধনে হলো কি না, সেটা দেখতে হবে।’

একই রকম কথা বলেন বর্ধিত সভার বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্রসহ যেকোনো অনৈতিক ও অবৈধ কাজের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরা যদি আমাদের দলের বা দলের সহযোগী সংগঠনের হন, তাঁদের কেউ রেহাই পাচ্ছেন না এবং পাবেন না। কাজেই সবাই সাবধান হয়ে যান।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আলম সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে আরও বড় সংঘর্ষ না হয়। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ সার্বিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।’