তিন দিনেও চালু হয়নি দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ফেরিঘাট

ঘাট চালু করতে এখন পর্যন্ত নদীতে বালুভর্তি প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। এরপরও ৩ নম্বর ঘাট চালু করা সম্ভব হয়নি। রাজবাড়ী, গোয়ালন্দ, ২৭ অক্টোবর। ছবি: এম রাশেদুল হক
ঘাট চালু করতে এখন পর্যন্ত নদীতে বালুভর্তি প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। এরপরও ৩ নম্বর ঘাট চালু করা সম্ভব হয়নি। রাজবাড়ী, গোয়ালন্দ, ২৭ অক্টোবর। ছবি: এম রাশেদুল হক

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ফেরিঘাট আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত চালু হয়নি। গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ও পন্টুনের বেসমেন্ট ভাঙনে দেবে যাওয়ায় ঘাটটি বন্ধ হয়ে যায়।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত দৌলতদিয়া ঘাট। বর্তমানে দৌলতদিয়ায় ছয়টির মধ্যে তিনটি ঘাট চালু আছে। এতে ঘাটে ভেড়ার জায়গা দিতে না পারায় পাঁচটি ফেরি বসিয়ে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ১০টি বড়, ৫টি ছোট ও ২টি মাঝারি ফেরি আছে। বর্তমানে প্রতিটি ফেরি সচল থাকলেও সব কটি ফেরি চালানোর মতো ঘাট নেই। ছয়টি ফেরিঘাটের মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩ নম্বর ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কসহ এলাকায় ভাঙনের কারণে ঘাটটি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ভয়াবহ ভাঙনের কারণে গত ৪ অক্টোবর ১ নম্বর ফেরিঘাট ও পরদিন ৫ অক্টোবর ২ নম্বর ফেরিঘাট বিলীন হলে ঘাট দুটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত ওই ঘাট দুটি চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে বর্তমানে শুধু ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ফেরিঘাট চালু আছে। মাত্র তিনটি ঘাট দিয়ে সব কটি ফেরি চালানো সম্ভব নয়। তাই বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ১২টি ফেরি চালু রাখা হয়েছে।

এদিকে ৩ নম্বর ঘাটে ভাঙন ঠেকাতে ও ঘাট চালু করতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) শুক্রবার থেকে ভাঙন এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে। আজ বিকেল পর্যন্ত বালুর বস্তা ফেলা অব্যাহত ছিল। এখন পর্যন্ত বালুভর্তি জিওব্যাগ জেগে না ওঠায় ঘাট চালু করা যাচ্ছে না বলে ঘাটসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ‘ফেরিঘাট এলাকার মাটি দো-আঁশপ্রকৃতির। যে কারণে ভারী বৃষ্টি ও সঙ্গে বাতাস থাকায় বৃহস্পতিবার ৩ নম্বর ফেরিঘাট থেকে ২ নম্বর ফেরিঘাটের কাছাকাছি প্রায় ২০০ ফুট লম্বা ও ৬০ ফুট প্রশস্ত জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে শুক্রবার সকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত বালুভর্তি প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। ভাঙনে ৩ নম্বর ঘাট সোজা পানির গভীরতা অনেক হয়েছে। শনিবার সেখানে পানির গভীরতা ছিল প্রায় ৩৮ ফুট। বালুভর্তি বস্তা ফেলার পরও আজ দুপুরে সেখানে পানির গভীরতা প্রায় ২৩ ফুট। বালুর বস্তা ফেলার পর সম্পূর্ণভাবে জেগে না ওঠা পর্যন্ত ঘাট চালু করা সম্ভব নয়। তবে আশা করি, কাল সোমবারের মধ্যে ঘাটটি চালু করা যাবে।’

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মাহাবুব আলী সরদার বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৭টি ফেরি আছে। সব কটি ফেরি চালু করতে হলে সব কটি ঘাট চালু থাকা দরকার। কিন্তু সেখানে ১ ও ২ নম্বর ঘাট অনেক আগে নদীতে বিলীন হয়েছে। অবশিষ্ট চারটি চালু থাকলেও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের কারণে ভাঙনে অনেক এলাকা বিলীন হওয়ায় ৩ নম্বর ঘাটটিও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মাত্র তিনটি ঘাট দিয়ে সব কটি ফেরি চালু রাখা সম্ভব না হওয়ায় পাঁচটি ফেরি বসিয়ে রাখা হয়েছে। এতে করে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।