যৌতুকের দাবিতে নববধূকে কুপিয়ে রক্তাক্ত, স্বামীর নামে মামলা

বিয়ে হয়েছে চলতি মাসের ২০ তারিখে। এর এক সপ্তাহ না পেরোতেই গত শনিবার যৌতুকের দাবিতে নববধূকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত মেয়েটির পরিবার রোববার তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। ঘটনার পরদিন রোববার বিকেলে পীরগাছা থানার পুলিশ ওই নববধূকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। পরে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা ফজলুল হক বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রোববার রাতে মামলা করেন। মামলার আসামি হলেন মেয়েটির স্বামী শাহাজাদা মিয়া (২৫) ও তাঁর বড় ভাই মুকুল মিয়া। তাঁরা পলাতক। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।

মামলার এজাহার ও মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের শাহাজাদা মিয়ার সঙ্গে চলতি মাসের ২০ তারিখে একই উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া সরদারপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের (১৯) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শাহাজাদাকে ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার দেওয়া হয়েছিল।

মেয়েটির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে স্বামী শাহাজাদা শিউলির পরিবারের কাছে আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তবে ওই পরিমাণ টাকা শিউলির পরিবার দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে শাহাজাদা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শিউলির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। শনিবার সন্ধ্যায় পুনরায় যৌতুকের টাকা আনতে বললে স্বামীর সঙ্গে শিউলির কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শাহাজাদা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিউলির হাতে ও পায়ে কুপিয়ে জখম করেন। নির্যাতনে শাহাজাদার বড় ভাই মুকুলও সহযোগিতা করেন বলে শিউলি অভিযোগ করেন।

মেয়েটি বলেন, কোপানোর কারণে তাঁর হাত ও পা দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ জন্য শনিবার রাতে স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসক দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করিয়ে ঘরে আটকে রাখা হয়। এ সময় ওই হাতুড়ে চিকিৎসক তাঁর হাতে ও পায়ে ২০টি সেলাই দেন।

মেয়েটির মা রহিমা বেগম বলেন, লোকমুখে খবর পেয়ে তিনি একজনকে সঙ্গে নিয়ে রোববার সকালে শাহাজাদার বাড়িতে যান। তবে শাহাজাদা তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দেননি। উল্টো হুমকি দিয়ে শাহাজাদা তাঁদের তাড়িয়ে দেন। পরে দুপুরের দিকে পীরগাছা থানায় গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন। এরপর থানার উপপরিদর্শক রিয়াজুল ইসলাম শিউলিকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন।

পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আল হাদী মোহাম্মদ বলেন, মেয়েটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। এ জন্য তাঁর হাতে ও পায়ে গভীর ক্ষত হয়েছে। এ ছাড়া বেশ রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাঁর সুস্থ হতে সময় লাগবে।