ডিসির নামে মুক্তমঞ্চের নামকরণ, এলাকাবাসীর ক্ষোভ
হবিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির মাঠে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নামে একটি মুক্তমঞ্চের নামকরণ নিয়ে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের অর্ধশত নাগরিক সম্মিলিতভাবে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, মঞ্চের নামকরণ হবে এলাকার গুণী ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধা বা যাঁরা সমাজের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, এমন লোকের নামে। রাষ্ট্রের অধীনস্থ কোনো চাকরিজীবীর নামে এটার নাম হওয়ার যৌক্তিকতা নেই।
ওই বিবৃতি থেকে জানা গেছে, জেলা শিল্পকলা একাডেমির মাঠে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) তত্ত্বাবধানে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ ফুট প্রস্থ ও ১৫ ফুট দৈর্ঘ্য একটি মুক্তমঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। মঞ্চটির নামকরণ করা হয়েছে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহমুদুল কবীর মুরাদের নামে। জেলা প্রশাসক নিজেই গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তমঞ্চটির উদ্বোধন করেছেন।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে হুমায়ূন খান নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ওনার নামে মঞ্চের নাম কেন হবে? এলাকায় এম এ রবের মতো বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ রেখে এমন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
কৌশিক আচার্য লিখেছেন, এই নাম বাদ দিয়ে গুণী ব্যক্তিদের নামে মঞ্চের নামকরণ করা উচিত।
হবিগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ ধর বলেন, ‘নামকরণের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন প্রতিবাদমুখর। শুনেছি, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সিদ্ধান্তে এই নামকরণ হয়।’
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে ১০ লাখ টাকায় খরচ করে এ মঞ্চ নির্মাণ করেছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্যদের প্রস্তাবে মঞ্চটি ডিসি মাহমুদুল কবীর মুরাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীর নামে এ ধরনের নামকরণ করা যায় কি না, তা জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, এতে কোনো আইনগত বাধা নেই।
মাহমুদুল কবীর প্রায় দেড় বছর ধরে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক আদেশে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। তবে এখনো তিনি হবিগঞ্জেই আছেন। নতুন জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি।