আ.লীগের উপদেষ্টা হলেন জয়নাল হাজারী

জয়নাল হাজারী। ফাইল ছবি
জয়নাল হাজারী। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সাংসদ জয়নাল হাজারী দেড় দশক পর দলীয় পদে ফিরলেন। ফেনীর এই নেতাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

এর আগে হাজারীর চিকিৎসার জন্য গত সেপ্টেম্বরে ৪০ লাখ টাকা অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ চিঠি নিতে আসেন জয়নাল হাজারী। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাঁর হাতে চিঠি তুলে দেন। এটি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।

এর আগে গত ২ অক্টোবর জয়নাল হাজারীর উপদেষ্টা হওয়ার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগের রাতে কেন্দ্রীয় নেতারা দেখা করতে গেলে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে সংবাদ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। পরদিন সকালে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার এ ধরনের খবর জানা নেই। খবরটি কোথা থেকে এল তাও জানি না। কে দিল এই খবর, তাও জানি না।’

এর জবাবে ওই দিন বিকেলেই সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন জয়নাল হাজারী। তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করতে চাই, আমাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে তাতে সই করে আওয়ামী লীগ অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে ফোরামে আমির হোসেন আমু ভাই, তোফায়েল ভাই সদস্য, সেই জায়গায় স্থান দিয়ে শেখ হাসিনা আমার প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।’

জয়নাল হাজারী ফেসবুক লাইভে আরও বলেন, ওনার (ওবায়দুল কাদের) জানারও কোনো দরকার নেই। আমাকে যে নেত্রী ৪০ লাখ টাকা দিয়েছেন, সেটাও তো তিনি জানতেন না। আমি নিজে ওনার বাসায় গিয়ে জানিয়ে এসেছি।

২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ১৬ আগস্ট রাতে যৌথ বাহিনী তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। তিনি তখন পালিয়ে আত্মগোপনে ভারতে চলে যান। ২০০৪ সালে হাজারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে তিনি ভারত থেকে দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। একে একে তাঁর বিরুদ্ধে করা সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান। ২০১০ সাল থেকে ঢাকাতেই থাকেন তিনি।

১৯৮৪-২০০৪ পর্যন্ত ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জয়নাল হাজারী। ফেনী-২ (ফেনী সদর) আসন থেকে ১৯৮৬, ’ ৯১ ও’ ৯৬ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন এই নেতা। মূলত ১৯৯৬ সালের পর তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় ফেনীতে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে প্রায় ১২০ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী মারা যান।