কর্মবিরতি পালন করায় প্রাথমিক শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ফাইল ছবি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ফাইল ছবি

বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিতে সম্প্রতি কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে যশোরে।

ওই জেলার কেশবপুর উপজেলার ১৫৮টি বিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষককেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে গড়ে পাঁচজন করে শিক্ষক হলেও সংখ্যাটি দাঁড়ায় প্রায় আট শ।

এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল জব্বার সরদার সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা প্রাথমিক কর্মকর্তার নির্দেশে।

ঢাকাতেও কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একই কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন তিনি।

আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন, বিভিন্ন জেলাতেই শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে এবং প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন। গত বুধবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করার কথা থাকলেও পুলিশি বাধায় করতে পারেননি। পরে হাজারো শিক্ষক দোয়েল চত্বরে অবস্থান নিয়ে দাবি পূরণে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকেরা।

মহাসমাবেশের কর্মসূচির আগে শিক্ষকেরা একই দাবিতে ১৪ থেকে ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন সময়ের জন্য কর্মবিরতি পালন করেন। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকেরা ১৪তম গ্রেডে ও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকেরা ১৫তম গ্রেডে বেতন পান। আর প্রশিক্ষণ পাওয়া প্রধান শিক্ষকেরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকেরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান। দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষকেরা বেতন বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করে আসছেন।