'আশ্রয়' চেয়ে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা

ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান৷ ছবি: আসিফ হাওলাদার
ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান৷ ছবি: আসিফ হাওলাদার

গণরুম সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে গত ১ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ১৫ কার্যদিবস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য তানভীর হাসান৷ এই সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানে ‘দৃশ্যমান পদক্ষেপ’ বা ‘সদিচ্ছার প্রতিফলন’ না দেখায় উপাচার্যের ‘ছায়াতলে আশ্রয়’ চেয়ে গণরুমের বাসিন্দাসহ ঢাবির বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁর (উপাচার্য) বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তানভীর৷

গণরুম সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখে গত বৃহস্পতিবার ডাকসু সদস্য তানভীর ঘোষণা দেন, আজ মঙ্গলবার তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে উঠবেন৷ পূর্বঘোষিত সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকতে যান তিনি। এ সময় ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাঁদের বাধা দেন৷

বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন৷ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সঙ্গে করে কাঁথা, বালিশ, তোষক ও কম্বল নিয়ে এসেছেন।

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের গণরুমের সমাধান চেয়ে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তাঁদের হাতে দেখা যায়, গণরুমের দুর্দশা নিয়ে নানান লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড৷

স্লোগানে শিক্ষার্থীরা ‘যাচ্ছি পঁচে গণরুমে, এখানে নাকি স্বপ্ন জমে’, ‘গণরুমের বঞ্চনা, মানি না মানব না’, ‘গণরুমে আমরা থাকি, প্রশাসন খায়-দায়-ঘুমায় নাকি’, ‘আমরা এখন চুপসে গেছি, জ্ঞানশূন্য কালো মাছি’ ইত্যাদি বলছিলেন৷

ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান বলেন, সময় বেঁধে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশাব্যঞ্জক কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাধুবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

তানভীর হাসান বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না, যা শিক্ষার্থীদের পূর্বের আশার বাণী শুনিয়ে কালক্ষেপণের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা আবারও আশাহত হওয়ার বেদনায় জর্জরিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন৷ তাই আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে ওঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ দাবি আদায়ের অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই৷’

তানভীর বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হয়েও শিক্ষার্থীদের আবাসনসংকট সমাধান করতে পারছেন না৷ শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করবে আর তিনি প্রাসাদোপম বাংলোয় আয়েশে থাকবেন, এটি কোনোভাবেই অভিভাবকসুলভ কোনো কাজ হতে পারে না। উপাচার্য মহোদয়ের বিবেকে না বাধলেও গণরুম সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের অভিভাবকের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে চাই।’

বেলা দেড়টার দিকে ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসানসহ চারজনের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্যের আহ্বানে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে উপাচার্য কার্যালয়ে যান। সেখানে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন উপাচার্য৷

তবে আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা এখনো উপাচার্যের বাসভবনের বাইরে অবস্থানে আছেন৷ তাঁদের সঙ্গে ছাত্র ফেডারেশন ও স্বতন্ত্র জোটের নেতা-কর্মীরাও যোগ দিয়েছেন৷