আমবাগানের পাখির বাসা ভাঙা যাবে না: হাইকোর্ট

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে একটি আমবাগানে থাকা পাখির বাসাগুলো না ভাঙতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুই মাস পাখির বাসাগুলো ভাঙা যাবে না। একই সঙ্গে ওই এলাকা কেন পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘পাখিদের উচ্ছেদে ১৫ দিন সময় দিলেন বাগানমালিক’ শিরোনামে প্রথম আলোতে আজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আরজি জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারুমিতা রায়। আদালতে তিনি প্রতিবেদনটি পড়েও শোনান।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামিউল আলম।

ঘোষিত আদেশে আদালত অভয়ারণ্য ঘোষণার কারণে বাগানমালিক ও ইজারাদারের সম্ভাব্য ক্ষতি নিরূপণ করে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

বাগানে কয়েক হাজার পাখির বাসা রয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
বাগানে কয়েক হাজার পাখির বাসা রয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলোর আজকের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে হুমকির মুখে পড়েছে কয়েক হাজার শামুকখোল পাখি। এখানকার একটি আমবাগানে ২৫টি গাছে কয়েক হাজার পাখির বাসা। সব বাসাতেই আছে ছানা। এগুলো এখনো উড়তে শেখেনি। বাগানমালিক আমবাগান পরিচর্যার জন্য এসব পাখির বাসা ভাঙতে চান। পাখিপ্রেমীদের প্রতিরোধের মুখে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ১৫ দিন সময় দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না হলে তিনি সব পাখির বাসা ভেঙে দেবেন।

চার বছর ধরে পাখিগুলো এই বাগানে বাচ্চা ফোটায়। বর্ষার শেষে এসে বাচ্চা ফুটিয়ে শীতের শুরুতে তারা আবার চলে যায়।

আতাউর রহমান নামের একজন ব্যবসায়ী এই আমবাগান ইজারা নিয়েছেন। তিনি বলেন, সাত লাখ টাকা দিয়ে তিনি বাগানটি দুই বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন। গত বছর পাখি থাকার কারণে তাঁর আম নষ্ট হয়েছে। এবার আর তিনি তা হতে দেবেন না। এবার আগ থেকেই তিনি পরিচর্যা শুরু করতে চান।

স্থানীয় পাখিপ্রেমী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাচ্চাগুলো উড়তে শিখতে অন্তত আরও এক মাস সময় লাগবে। বন অধিদপ্তর আমগাছের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে আর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এখন পাখিগুলোর বাসা ভেঙে দিলে হাজার হাজার পাখির বাচ্চা মারা পড়বে। এরই মধ্যে বাসা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় স্থানীয় লোকজন ১০০ পাখির বাচ্চা ধরে নিয়ে গেছে।