স্টেশনে ফুটফুটে শিশুর জন্ম দিলেন প্রতিবন্ধী নারী

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুরের মেলান্দহ রেলস্টেশনে ঘুরে বেড়ানো মানসিক প্রতিবন্ধী নারী এক ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রেলস্টেশনেই ওই নবজাতকের জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও সন্তান মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে পুলিশের কয়েকজন সদস্য মানসিক প্রতিবন্ধী মা ও নবজাতকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতাল থেকে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে যখন মা ও সন্তানকে আনা হয়েছিল, তখন তাদের শরীরে বালি ও মাটি লেগে ছিল। পরে তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা মা ও সন্তানের জন্য কাপড় কিনে দেন। মানসিক প্রতিবন্ধী মা তাঁর সন্তানকে কাছে নিচ্ছিলেন না। বারবার নবজাতকটিকে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। পরে হাসপাতালের নার্সরা নবজাতকটিকে তাদের কাছে নেন।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডের একটি বিছানায় ওই মা ঘুমিয়ে আছেন। নবজাতকটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স মরজিনা বেগমের কোলে। সে শান্তভাবে ঘুমাচ্ছে। মা ও মেয়েকে দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে হাসপাতালে এসেছেন। অনেকেই আবার নবজাতকটিকে লালন–পালনের জন্য নিতে চাইছেন।

রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা রেজিয়া খাতুন বলেন, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে রেলস্টেশনেই ঘুরে বেড়াতেন। গতকাল বিকেলে ওই প্রতিবন্ধী নারী রেলস্টেশনে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। মা ও নবজাতক মাটিতে পড়ে ছটফট করছিল। এ সময় তিনি গিয়ে নবজাতকটিকে কোলে তুলে নেন। পরে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে মা ও মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালের নার্স মরজিনা বেগম বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা থেকে নবজাতকটি আমাদের কাছেই আছে। সে খুব ফুটফুটে। হাসপাতালের একজনের কোল থেকে আরেকজনের কোলে ঘুরছে।’

মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছে। দুজনকেই সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওই মা সন্তান পালনে সক্ষম নন। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী। নবজাতকের উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।’

মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) তামীম আল ইয়ামীন প্রথম আলোকে বলেন, অনেকেই নবজাতকটিকে নিতে চাইছে। তবে আজ বিকেল চারটার দিকে নবজাতকের বিষয়ে একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুসারে আপাতত নবজাতকটিকে কারও কাছে দেওয়া হচ্ছে না। এখন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে নবজাতকটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। পরে নবজাতককে নিয়ে আরেকটি সভা করে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।