ছাত্রকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ

সোহান শেখ
সোহান শেখ

মাদারীপুরে এক স্কুলছাত্রকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করেছে। গত মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে শহরের ভুঁইয়াবাড়ির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই স্কুলছাত্রের নাম সোহান শেখ (১৫)। সে রাজৈরের তেলিকান্দি এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। সে ইউনাইটেড সরকারি ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত। হাবিবুর রহমান শেখ তাঁর চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুর শহরের ভুঁইয়াবাড়ির মোড় এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

পুলিশ ও নিহত কিশোরের স্বজনেরা বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয় সোহান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। পরিবারের লোকজন একাধিকবার সোহানের মুঠোফোনে কল দিয়ে তাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে সোহানদের ঘরের পাশে তিনতলা একটি ভবনের নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে সোহনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে যেই ভবনের নিচে সোহানের লাশ পাওয়া গেছে, সেই ভবনের মালিক এনায়েত হোসেন বলেন, সোহান কীভাবে তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে নিচে পড়ল, তা তিনি বলতে পারছেন না।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, সোহান স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। সোহান মাদকাসক্ত ছিল। গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে সোহানকে হত্যা করা হতে পারে।

সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু সফর হাওলাদার বলেন, হাসপাতালে আসার পর মনে হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত। পরে পরিবারের লোকজন জানান, ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ওই কিশোরকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার ডান হাত ভাঙা ছিল, এক চোখের ওপরে কাটা দাগ ও দাঁত ভাঙা ছিল। মাথায় গুরুতর আঘাত থাকায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণে তার মৃত্যু হয়।

সোহানের বাবা হাবিবুর রহমান শেখ বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে তিনি ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশেই পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর ছেলে মাদকাসক্ত কি না, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

হাবিবুর বলেন, ‘আমার একটাই ছেলে। কে আমার ছেলেকে মারল, কিছুই বলতে পারছি না। তবে আমার ছেলে ছাদ থেকে একা একা পড়তে পারে না। ওরে কেউ হত্যা করে তারপর নিচে ফেলে দিছে। আমি এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গতকাল বেলা আড়াইটায় মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সওগাতুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছেন। ওই কিশোরের শরীরে যে আঘাতের চিহ্ন আছে, সেটা ছাদ থেকে পড়ে কি না, তা বোঝা যাচ্ছে না। সকালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। আর নিহত ব্যক্তির পরিবার এখনো থানায় মামলা করেনি।