কিশোর সাঈদ আদৌ খুনই হয়নি, সাঈদ খুনের চার আসামি খালাস

বাবা আজমের সঙ্গে কিশোর সাঈদ। ফাইল ছবি
বাবা আজমের সঙ্গে কিশোর সাঈদ। ফাইল ছবি

আবু সাঈদ নামের কিশোর আদৌ খুন হয়নি। কথিত আবু সাঈদ খুনের মামলার দায় থেকে আজ বৃহস্পতিবার চার আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক বেগম সামসুন নাহার এই নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি আলী আজগর স্বপন প্রথম আলোকে বলেন, কিশোর আবু সাঈদ খুনের মামলায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালত বলছেন, তদন্তে ত্রুটি ছিল। ভালো তদন্ত হলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসত।

আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, কিশোর আবু সাঈদকে হত্যার অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে চার বছর ধরে মামলা চলছিল।

গত আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে জানা যায়, আবু সাঈদ নামের কিশোর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়নি। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে সাঈদসহ তার মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার আদালতে হাজির করে হাজারীবাগ থানার পুলিশ। তখন আসামিপক্ষ থেকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-কে জানানো হয়, এই আদালতে যে কিশোর সাঈদ খুনের বিচার চলছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ, সাঈদ খুনই হয়নি। তখন সাঈদসহ তাঁর মা-বাবাকে ওই আদালত হাজির করার নির্দেশ দেন।

গত ৫ সেপ্টেম্বর সাঈদের কাছে আদালত জানতে চান, সে কিশোর সাঈদ কি না। জবাবে সাঈদ জানায়, সে সাঈদ। আদালত সাঈদের বাবা আজমের জবানবন্দিও রেকর্ড করেন। তখন আজমও জানান, তাঁর ছেলে খুন হয়নি, ফিরে এসেছে। আদালত তখন এ ঘটনা তদন্ত করে হাজারীবাগ থানাকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশের তদন্তেও উঠে আসে, কিশোর সাঈদ খুন হয়নি। এরপর দুই দফা রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের বক্তব্য শুনে আজ আদালত কথিত সাঈদ হত্যার দায় থেকে চার আসামিকে মুক্তি দেন।

খালাস পাওয়া চারজন হলেন সোনিয়া আক্তার, তাঁর ভাই আফজাল, সাইফুল হোসেন ও বাবুল রাঢ়ী।

সোনিয়াদের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আবু সাঈদ নামের এক কিশোর হাজারীবাগ থেকে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে হারিয়ে যায়। তখন তার বাবা হাজারীবাগ থানায় অপহরণ মামলা করেন। মামলার পর ডিবি পুলিশ তাঁর মক্কেলদের গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করে। আবু সাঈদকে অপহরণ করে হত্যা করেছে বলে দুজনকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে। সোনিয়ার সাবেক স্বামী মিরাজের প্ররোচনায় পুলিশ কিশোর আবু সাঈদ হত্যার নাটক সাজিয়েছিল। আদালতের রায়ে তা প্রমাণিত হলো। মিথ্যা মামলা ও হয়রানি করার অভিযোগে মিরাজসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার আবেদন করেছেন। আর তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে আদালতে অনুরোধ করেছেন।

আরও পড়ুন