জামালপুরে এক দিনে ৩৪ জনকে কামড়েছে কুকুর

জামালপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে এক দিনে সাংবাদিকসহ ৩৪ জনকে কামড়ে দিয়েছে কুকুর। গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর থেকে রাত আটটা-নয়টা পর্যন্ত কুকুরে কামড়ানোর এ ঘটনা ঘটে। শিশুরা আক্রমণের শিকার হয়েছে বেশি। এ ঘটনায় শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক না পেয়ে বিপাকে পড়ে আক্রান্ত লোকজন।

কুকুরে কামড়ানোর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো.শফিকুজ্জামান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত হাসপাতালে ২২ শিশু এবং ১২ জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন।’

হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে শফিকুজ্জামান বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তিরা পরবর্তী প্রতিষেধক হাসপাতাল থেকে নিতে পারবেন। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে কুকুরগুলো নিধন করা প্রয়োজন।’

আহত লোকজনের মধ্যে রয়েছে পূর্ব-পশ্চিম ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি মেহেদী হাসান, শেখের ভিটা গ্রামের ফরহাদ মিয়া (৪০), কাচারিপাড়া এলাকার আবু সালেহ (৩০), পাঁচ রাস্তা মোড়ের মোহাম্মদ তাহা (৬), বগাবাইদ এলাকার শারিয়া খাতুন (৫), একই এলাকার প্রিয়া (১৯) ও নাবিহা (৫), পাথালিয়া এলাকার ফারজা (৪), মেলান্দহ এলাকার জিল্লুর রহমান (৪৪), নান্দিনা এলাকার হুমায়রা (১৭), আমলাপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আবির (৯), মাছিমপুর এলাকার মো. শফিক (৩২) ও সকাল বাজার এলাকার মো. হাবিব (৭)।

স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর থেকে একদল কুকুর জামালপুর শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়, সর্দারপাড়া, শেখের ভিটা, বগাবাইদ, কাচারিপাড়া, শাহাপুর, পাথালিয়া ও চন্দ্রা এলাকায় শিশুসহ লোকজনকে লোকজনকে কামড়াতে শুরু করে। যে সামনে পড়েছে, তাকেই কামড়েছে কুকুর। কুকুরে কামড়ানো রোগীরা জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। তবে হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক না থাকায় আহত লোকজন বিপাকে পড়ে। তারা অন্য জায়গা থেকে প্রতিষেধক কিনে চিকিৎসা নেয়।

শেখের ভিটা এলাকায় কুকুরের কামড়ের শিকার ফরহাদ মিয়া বলেন, ‘আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ একদল কুকুর এসে আমাকে ঘিরে ধরে। পরে কয়েকটি কুকুর আমার পায়ে কামড় দেয়। মানুষ আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে যাই। কিন্তু সেখানে কোনো প্রতিষেধক পাইনি। পরে বাইরে থেকে প্রতিষেধক কিনে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।’

জামালপুরের পৌর মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম বলেন, ‘কুকুর নিধনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবু আক্রান্তের সংখ্যা যেহেতু বাড়ছে, এ বিষয়ে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’