মা জানেন না ছেলে বেঁচে নেই

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারার প্রবাসী আরিফ রাজ আজাদের (৩৩) মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর তিন দিন পরও তাঁর মাকে জানানো হয়নি। গত বৃহস্পতিবার ভোর ৭টায় দুবাই এয়ারপোর্টে কার্গো ভিলেজের পার্কিং লটের তৃতীয় তলায় নিজের গাড়ি পার্ক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িসহ নিচে পড়ে যান তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। আরিফের অসুস্থ মা জানেন ছেলে এখনো দুবাইয়ে আগের মতোই আছে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ সহ্য করতে পারবেন না বলে পরিবারের কেউ তাঁকে তা জানাননি।

আনোয়ারার বটতলী গ্রামের ওয়াদ্দার পাড়ার মৃত নুর মিয়ার ছেলে আরিফ রাজ আজাদ। তাঁর পারিবারের সদস্যরা জানান, বটতলীর নুর মিয়ার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আরিফুর রহমান সবার বড়। ২০০৮ সালে আরিফ দুবাই যান। তার মধ্যে ছয় বছর ধরে কাজ করছেন সেখানকার ‘অল পোর্ট কার্গো সার্ভিসেস’ নামের প্রতিষ্ঠানে। ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় মারা যান তিনি। আরিফ মারা যাওয়ার তিন দিন আগে সোমবার স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে তামিম রহমানকে দুবাই থেকে দেশে পাঠান। তবে আরিফ মারা যাওয়ার পর তাঁর মরদেহ আনতে পুনরায় দুবাই গিয়েছেন স্ত্রী শামসুন্নাহার।

গতকাল শনিবার বেলা দেড়টায় ওয়াদ্দার পাড়ায় গিয়ে দেখা যায় পরিবারের লোকজনের চাপাকান্না। নিহতের ছোট ভাই আরিফুর রহমান বলেন, ‘বুধবার রাতে সর্বশেষ আমার ও আমার মায়ের সঙ্গে কথা হয় ভাইয়ের। বৃহস্পতিবার ভোরে হোয়াটসঅ্যাপে বারবার কল করলেও ভাইয়ের সাড়া না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। পরে সকাল নয়টায় শুনি ভাই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।’

আরিফের ছোট বোন সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘স্ত্রী ও ছেলেকে ছুটিতে পাঠিয়ে চির ছুটিতে চলে গেলেন ভাই। আমরা কী করে বাঁচব। এখনো মাকে জানানো হয়নি ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ। অসুস্থ মা এ খবর জানলে সইতে পারবেন না।’