দেশে মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটপাট হচ্ছে: ফখরুল

বিএনপির প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে। ছবি: প্রথম আলো
বিএনপির প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে। ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে তামাশা করছে। মেগা প্রকল্পের নামে এখন মেগা লুটপাট করা হচ্ছে। দেশ আজ ভয়াবহ দুঃশাসনের মধ্যে চলছে।

বিএনপির মহাসচিব আজ সোমবার বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে (বিডি হল) দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পরিশুদ্ধ হওয়ার নাটক করে লাভ নেই। দেশের সবকিছুই এই সরকার শেষ করে দিয়েছে। তারা যে দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী, অর্থ পাচারকারী তা স্বীকার করে নিয়েছে বলেই নিজেদের পরিশুদ্ধ করতে চাইছে। সচেতনভাবেই এই সরকার দেশের ব্যাংক থেকে এক লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আজ তারা কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি কিনছে, ক্যাসিনোর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে মালয়েশিয়া ও ইংল্যান্ডে বাড়িঘর করছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করছে। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জোর-জবরদস্তি করে আর ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। পৃথিবীর কোনো দেশে জোর করে কারও ক্ষমতায় চিরস্থায়ী হওয়ার নজির নেই।’

স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা আজ বিপন্ন। মানুষের আজ বাক্‌স্বাধীনতা নেই। সাংবাদিকেরা লিখতে পারছেন না।’ তরিকুল ইসলামের স্মরণসভার অনুষ্ঠান টাউন হল মাঠে করার অনুমতি না দেওয়ায় তিনি বলেন, ‘এই সরকার বিএনপিকে ভয় পায়। ভয় পায় জননেতা তরিকুল ইসলামের অনুসারীদের। সে কারণে আজকের এই স্মরণসভাকে তারা চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী করেছে।’

তরিকুল ইসলামের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম ও আমি একই রাজনৈতিক স্কুলের সহপাঠী ছিলাম। তিনি সারাটা জীবন এই দেশের কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখেছেন। তরিকুল ছিলেন আপাদমস্তক একজন রাজনীতিক। তাঁর চলনে, বলেন, সবকিছুতেই ছিল রাজনীতির সুস্পষ্ট ভাব। জননেতা তরিকুল ইসলামের দেখানো পথ দিয়ে আমরা তীব্র গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্বের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছিনিয়ে আনব।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও প্রয়াত তরিকুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস বেগম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শাহাজাহান, শামছুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, মেহেদী হাসান, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক।

এর আগে দুপুর ১২টায় তরিকুল ইসলামের করব জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। কারবালা কবরস্থানের পাশের মাঠে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে পবিত্র কোরআন বিতরণ করা হয়। পবিত্র কোরআন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচি শুরু করেন। সঙ্গে বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।