হাজারীবাগে কলেজছাত্র আরিফুল হত্যায় জড়িত ১০ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ

নিহত আরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র আরিফুল ইসলাম (২০) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও হাজারীবাগ থানার পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, আরিফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১০ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির জের ধরে কলেজছাত্র আরিফুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও কয়েকজন পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ অক্টোবর রাত আটটার দিকে হাজারীবাগের বেড়িবাঁধসংলগ্ন ষড় কুঞ্জ নতুন সেতুর কাছে আরিফুল তাঁর বান্ধবী সানজিদা আক্তারের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তখন স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁদের উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করেন আরিফুল। তখন স্থানীয় ২০ থেকে ২৫ জন যুবক লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আরিফুলকে কুপিয়ে জখম করেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরিফুল নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে খুনের মামলা করেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্র বলছে, মামলার পর হাজারীবাগ থানা-পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে ২ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে প্রত্যেক আসামিকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

১০ আসামি হলেন বরিশালের আগৈলঝাড়ার পশ্চিম রানতা গ্রামের মিরাজ (২২), বরিশালের গৌরনদীর পশ্চিম শাওড়া গ্রামের নয়ন (২৪), রবিউল আওয়াল (১৯), সাগর (২০) সজিব শরীফ (২২), বরিশালের বাকেরগঞ্জের কাজলাকাটি গ্রামের পারভেজ (২০), নড়াইলের নাড়াগাতির কান্দুরিয়া গ্রামের বেল্লাল হোসেন শুভ (২০), গাজীপুরের কাপাসিয়ার ইমন (১৯), চাঁদপুরের রবিউল আওয়াল-১ (১৯) এবং ঝালকাঠির নলছিটির মহিউদ্দিন বাবু (২২)।

হাজারীবাগ থানা-পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, আরিফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন আসামিরা। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, আসামিরা দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। তাঁদের সহযোগীরা এলাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে থাকে। এ ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে কোনো মদদদাতা আছে কি না, তা জানা দরকার।

পুলিশ কর্মকর্তা কাজী শরীফুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রধান আসামি কাইয়ুম এখনো পলাতক। সেদিন আরিফুল ইসলামের সঙ্গে কাইয়ুমের প্রথম দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। কাইয়ুমই তাঁর সহযোগীদের ডেকে এনে আরিফুল ইসলামকে হামলা করেন। যেসব আসামি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বেশির ভাগ হাজারীবাগে ভাসমান।

নিহত আরিফুলের বাবা শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিনা কারণে তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর ছেলে খুব মেধাবী ছিলেন। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। তাঁর ছেলে খুনের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।