হয় পরীক্ষার সুযোগ, নয় টাকা ফেরত

সব আবেদনকারীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ অথবা অনির্বাচিত শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন। গতকাল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।  ছবি: প্রথম আলো
সব আবেদনকারীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ অথবা অনির্বাচিত শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন। গতকাল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছবি: প্রথম আলো

কৃষি ও কৃষির প্রাধান্য থাকা সাতটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফি দিয়েও যোগ্য অনেক আবেদনকারী পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সচেতন শিক্ষার্থীরা। এক মানববন্ধনে তাঁরা দাবি করেছেন, হয় সব যোগ্য আবেদনকারীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে, নয়তো বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। 

বাকৃবির শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে গতকাল সোমবার দুপুরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছভিত্তিক সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৩০ নভেম্বর। এর মধ্যে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কমিটি মোট আসনের ১০ গুণের কিছু বেশি শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্য হিসেবে বাছাই করে। যদিও আসনসংখ্যার ১০ গুণ পরীক্ষার্থী বাছাইয়ের শর্তটি ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতেই উল্লেখ করেছিল কমিটি। গত ১৯ অক্টোবর ভর্তি কমিটি এক ঘোষণায় জানায়, বাছাই করা শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম জিপিএ দাঁড়িয়েছে ৯.১৫। এই জিপিএ ও তদূর্ধ্বধারী শিক্ষার্থীদের ২০ অক্টোবর থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে বলে কমিটি।

ভর্তি কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি–সংক্রান্ত বিভাগগুলো মিলিয়ে আসন রয়েছে ৩ হাজার ৫৫০টি। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় ব্যতীত মোট জিপিএ ন্যূনতম ৭.০ থাকলেই আবেদন করা যাবে বলা হয়েছিল। আবেদন ফি ছিল ১ হাজার টাকা। নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন পড়ে ৭৫ হাজার। ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা শর্তমোতাবেক শেষে বাছাই করা হয় ৩৬ হাজার শিক্ষার্থীকে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যে শিক্ষার্থী পরীক্ষাই দিতে পারবেন না, তাঁর কাছ থেকে ফরমের মূল্য বাবদ ১ হাজার টাকা ভর্তি ফি নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈতিক ও মানবিক চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ব্যবসার জায়গা না। গুচ্ছ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানোর কথা বলে এখন তাঁদের পরীক্ষাই দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে টাকা নেওয়া হচ্ছে ঠিকই। বক্তারা আরও বলেন, সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় এত কমসংখ্যক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া অযৌক্তিক। 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আসিফ, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের রিফা সাজিদা, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের সংগঠক তন্ময় নিবিড়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি গৌতম কর ও সহসভাপতি ইব্রাহীম খলিল, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ঈদ-ই-আমিন প্রমুখ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আখতার হোসেনের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভর্তি কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচিত ব্যক্তিদের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বলবৎ রয়েছে। টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।