মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলায় স্ত্রী ও ছেলে রিমান্ডে

সুনামগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারিক হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম ও ছেলে মিলন মিয়াকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার এই দুজনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানালে বিচারক ইশরাত জাহান রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নিহত আবদুল বারিকের (৭৫) বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে। গত রোববার সকালে তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পরদিন আবদুল বারিকের স্ত্রী আছিয়া বেগম (৬০) ও ছেলে মিলন মিয়াকে (১৮) আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলার বাদী আবদুল বারিকের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মো. মাসুক মিয়া।

পুলিশ জানায়, রোববার দুপুরে আবদুল বারিকের রক্তাক্ত লাশ নিয়ে দোয়ারাবাজার থানায় আসেন তাঁর ছেলে মিলন মিয়া ও স্ত্রী আছিয়া খাতুন। তাঁরা পুলিশকে জানান, গ্রামের অন্য একটি পক্ষের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে তাঁদের বিরোধ আছে। প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় আবদুল বারিক মারা গেছেন। বাকিরের মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল।

পুলিশ একপর্যায়ে আছিয়া বেগমের সঙ্গে থাকা তাঁর সাত বছরের নাতি শাহীন মিয়াকে আলাদা একটি কক্ষে নিয়ে এ বিষয়ে কথা বলে। শাহীন তখন পুলিশকে জানায়, তাঁর দাদা আবদুল বারিকের সঙ্গে সকালে দাদি আছিয়া বেগম ও চাচা মিলন মিয়ার ঝগড়া ও মারামারি হয়েছে। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় রেখেই ওই গ্রামে আবদুল বারিকের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে বারিকের ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ পায়। পরে ঘর তল্লাশি করে রক্তমাখা একটি শাবল উদ্ধার করে।

স্থানীয় লোকদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ওই গ্রামের অন্য একটি পক্ষের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে আবদুল বারিকের পরিবারের বিরোধ আছে। এ নিয়ে ২০১৭ সালে দুপক্ষের সংঘর্ষে বারিকের প্রতিপক্ষের আফিজ আলী নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। ওই হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আবদুল বারিকের এক ছেলে সাবাজ মিয়া বর্তমানে জেলে। অন্য দুই ছেলে মিলন মিয়া ও ফারুক মিয়াও এই মামলা জেল খেটেছেন। মিলন বাড়িতে থাকেন ও দোয়ারাবাজার কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়েন। ফারুক মিয়া চাকরি সূত্রে আছেন সিলেট শহরে।

পুলিশ বলছে, ঝগড়ার একপর্যায়ে শাবলের আঘাতে আবদুল রাবিক মারা যান। পরে তাঁরা প্রতিপক্ষে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসেম জানান, এই হত্যাকাণ্ডে আছিয়া বেগম ও মিলন মিয়া জড়িত আছেন—তা প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।