শুধু চুনোপুঁটি নয়, রাঘববোয়ালদেরও ধরছি: দুদক চেয়ারম্যান

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: দুদকের সৌজন্যে।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: দুদকের সৌজন্যে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শুধু চুনোপুঁটি নয়, রাঘববোয়ালদেরও ধরছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে দুদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের সময় তাদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি হয়।

প্রতিনিধিদলটি দুদক চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চায়, দুদকের মামলায় ৩০ শতাংশ আসামি খালাস পাওয়ার কারণ কি দুর্বল তদন্ত, নাকি দুর্বল প্রসিকিউশন অথবা অন্য কিছু? এ প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনাদের ধারণা হয়তো সব কটিই সত্য। তবে বর্তমানে কমিশন তদন্ত এবং প্রসিকিউশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাপক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। কমিশনের মামলায় সাজার হার একসময় মাত্র ২২ শতাংশে নেমে এসেছিল, যা বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, কমিশন দুই শতাধিক মানিলন্ডারিং মামলা করেছে। এর মধ্যে ১৬টি মামলায় বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে। প্রতিটি মামলায় আসামিদের সাজা হয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান প্রথমেই প্রতিনিধিদলটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত তিন বছরে কমিশনের ১৬৪ জন কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশনের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি একটি সুশাসনের বিষয়। আমরা সমন্বিতভাবে সরকারি পরিষেবা ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নে চেষ্টা করছি। এ ক্ষেত্রে কমিশন বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করে চিঠি দিয়েছে। আমরা আশা করি, এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে।’ চেয়ারম্যান আরও বলেন, এফবিআইয়ের দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে দুদকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, অপরাধীদের গতিবিধি, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিরোধ করার জন্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় কমিশন। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে উন্নতমানের ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনে আপনারা সহযোগিতা করতে পারেন।’

জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আবাসিক আইন উপদেষ্টা এরিক ওপাঙ্গার সঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের দুই কর্মকর্তা বৈঠকে অংশ নেন।