জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিনটার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংঘর্ষ। ফাইল ছবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংঘর্ষ। ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাড়ে তিনটার পর হল না ছাড়লে হলগুলোতে পুলিশ ও আইনি সহায়তা নিয়ে ছাত্র–ছাত্রীদের বের করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ।

বশির আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে হলগুলোতে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাড়ে তিনটার পর হল সংলগ্ন দোকান পাট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সকাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দেন। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যের অপসারণ দাবি, ছাত্রলীগের মারধর ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ শুরু হয়। বেলা পৌনে দুইটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সমাবেশ চলছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে আসেন। তাঁরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের মিছিল থেকে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটা থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে রাখেন। যত দিন না উপাচার্যকে অপসারণ করা হবে, তত দিন অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় আন্দোলনকারীরা যখন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন, তখন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকেরা সেখানে যান। তাঁরা আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তুলে দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকতে পারেননি। এর কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ব্যানারবাহী একটি মিছিল সেখানে আসে। ওই মিছিলে দুই শতাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন। মিছিল থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়। হামলার ঘটনার পর এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজ বেলা ১টার মধ্যে সব আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কর্মসূচি বন্ধ করেননি আন্দোলনকারীরা। এতে হল খালি করার জন্য প্রশাসনের বেধে দেওয়া দুপুর ১টা পর্যন্ত সময় কার্যকর হয়নি।

আরও পড়ুন: