ঠাকুরগাঁওয়ে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের রুহিয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে।

হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল করিম এ আদেশ জারি করেন। তিনি বলেন, রুহিয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কায় সভাস্থলের আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

স্থানীয় দলীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সাংসদ দবিরুল ইসলামের অনুসারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসানের অনুসারীরা দুভাগে বিভক্ত। ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন সম্মেলনের জন্য হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের রুহিয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বর্ধিত আহ্বান করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নগেন কুমার পাল, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান। এ বর্ধিত সভায় সাংসদ অনুসারী নেতা-কর্মীদের আমন্ত্রণ না জানানো ও বর্ধিত সভার স্থান ইউনিয়নের মূল জায়গায় না করে দূরে আয়োজন করায় দুপক্ষের দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।

সাংসদ অনুসারী বকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুস সাত্তার অভিযোগ করেন, দলের ত্যাগী নেতারা বাদ দিয়ে ইউনিয়নে বর্ধিত সভা আহ্বান করা হয়েছিল। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। বর্ধিত সভায় দলের অধিকাংশ নেতাকে ডাকা হয়নি কেন, এ বিষয়ে জবাব চাইতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেতা-কর্মীরা বর্ধিত সভায় যান। সেখান গিয়ে দেখা যায়, সভাস্থলে কেউ নেই। তবে বকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তাহের দাবি করেন, ‘বর্ধিত সভায় কমিটির সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। নৌকাবিরোধীরা সম্মেলন বানচাল করতে বর্ধিত সভায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল। আমরা টের পেয়ে দ্রুত বর্ধিত সভা সেরে ফেলি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান বলেন, দলে নৌকাবিরোধীদের কোনো জায়গা নেই, এটা টের পেয়ে তারা নানা অজুহাতে বর্ধিত সভায় হামলা করার পরিকল্পনা নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন সভাস্থলের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলার সময় সাংসদের অনুসারীরা লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্রসহ দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। এরপর দুপক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে হরিপুর সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল উপজেলা প্রশাসন।