সরকারি স্টিকার সাঁটানো মাইক্রোবাস থেকে দুই তক্ষক চোরাচালানি আটক

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যশোরে সরকারি স্টিকার সাঁটানো একটি মাইক্রোবাস থেকে সাড়ে ৫৪ লাখ টাকাসহ তক্ষক চোরাচালান চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। যশোর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া মোড় এলাকায় যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক থেকে তাদের আটক করে।

আটক দুজন হলেন নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার বলরামপুর গ্রামের কাজী মাসুদ পারভেজ (৪৫) এবং গোপালগঞ্জের মুকছুদপুর উপজেলার আইকাদিয়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম (৪৪)। এ সময় মাইক্রোবাসচালক আবুল খায়েরকে (৩২) আটক করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বারপুর উপজেলার বড়ুরা গ্রামে।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় আজ বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে। তাদের আদালতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।


যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি স্টিকার সাঁটানো একটি মাইক্রোবাসে মাদক বহন করা হচ্ছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল অভিযান চালায়। মাইক্রোবাসে থাকা মাসুদ পারভেজ, রেজাউল ইসলাম ও চালক আবুল খায়েরকে আটক করা হয়। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তল্লাশি করে তাদের কাছে থাকা চারটি ব্যাগ থেকে ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের অপরাধীদের ‘হোয়াইট কালার ক্রিমিনাল’ বলা হয়ে থাকে। দেখতে বেশ স্মার্ট, কথাবার্তায় পারদর্শী, সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষের সঙ্গে তাঁরা চলাফেরা করেন। দামি গাড়িতে চলাফেরা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যাতে সহজে সন্দেহ করতে না পারেন, সে জন্য গাড়িতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগিয়ে থাকেন। তাঁরা যে সিলভার রঙের মাইক্রোবাসটি ব্যবহার করছিলেন, সেটিতে সরকারি স্টিকার সাঁটানো ছিল। সেখানে লেখা ছিল ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আটক রেজাউল ইসলাম ও মাসুদ পারভেজ বন্যপ্রাণী তক্ষক কেনাবেচার মধ্যস্থতাকারী। তাঁরা ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসটি আট হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া বাজারের পাশের একটি বাড়িতে যান। সেখানে তক্ষকের একটি ছোট হাড় কেনাবেচা হয় এক কোটি টাকায়। তাঁরা সেকেন্ড পার্টি। ফাস্ট পার্টি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়। আর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তাঁরা নেন ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই টাকা নিয়ে তাঁরা ঢাকায় ফিরছিলেন। এই টাকার তিন ভাগের এক ভাগ তাঁরা দুজনে পাবেন। বাকি দুই ভাগ দেওয়া হবে অন্য পার্টিকে। অন্য পার্টি কারা এই বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে মাসুদ পারভেজ আইটি ব্যবসায়ী। ঢাকার শ্যামলীতে ‘স্মার্ট আইটি’ নামে তাঁর একটি প্রতিষ্ঠান আছে। আর রেজাউল ইসলাম হাউস বিল্ডিং ঠিকাদার। তিনিও ঢাকায় থাকেন।