নিখোঁজ শিশুর বস্তাবন্দী লাশ মিলল ধানখেতে

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নিখোঁজের চার দিন পর আকিবের লাশের উদ্ধারের পর তার মায়ের আহাজারি।  ছবি: প্রথম আলো
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নিখোঁজের চার দিন পর আকিবের লাশের উদ্ধারের পর তার মায়ের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো

শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলায় নিখোঁজের চার দিন পর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকিব ইসলাম খানের (১২) বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পৌর শহরের কালিনগর এলাকায় তল্লাশির সময় পুলিশ ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে।

শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ তিন প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন রাকিবুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন ও সিয়াম। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও সাতজনকে আটক করা হয়েছে।

আকিব শহরের পূর্ব কালিনগর এলাকার আবদুর রউফের ছেলে। পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিকেলে আকিব বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। সে কালো শার্ট ও কমলা রঙের প্যান্ট পরে বাড়ি থেকে বের হয়। আকিবের হদিস না পেয়ে রোববার তার বাবা আবদুর রউফ নালিতাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 

গত চার দিন আকিবের সন্ধান চেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়। এ ছাড়া তার সন্ধানে পুলিশের বিভিন্ন থানায় অডিও বার্তা পাঠানো হয়।

খোঁজাখুঁজির পর আকিবের বাবা আবদুর রউফ গত মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশী চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর গতকাল বেলা ১১টার সময় পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম অন্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আকিবদের বাড়িতে যান। তাঁরা আশপাশের এলাকা তল্লাশি করেন। একপর্যায়ে বাড়ির ২০০ মিটার দূরে ধানখেতে বস্তাবন্দী অবস্থায় আকিবের লাশ পাওয়া যায়।

আবদুর রউফ বলেন, বাড়ির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ আছে। এর জেরে প্রতিবেশীরা তাঁর সন্তানকে হত্যা করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

দুপুরে আকিবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা ঝরনা বেগম ছেলের কথা বলে বিলাপ করছেন। আকিবের মরদেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রামের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁরা আকিবের হত্যাকারীদের চিহ্নিত হয়ে দ্রুত শাস্তি দেওয়ার জন্য দাবি জানান। পুলিশ সুপার ওই বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করেন এবং তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আশ্বাস দেন।

পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি সত্যি দুঃখজনক। আমি ওই বাড়ির চারপাশে খোঁজখবর করেছি। একপর্যায়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ এলাকায় কাজ করছে।

নেত্রকোনায় প্রতিপক্ষের হামলায় খামারি নিহত

নেত্রকোনার খালিয়াজুরিতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হাঁস খামারি রফিকুল ইসলাম (৫২) মারা গেছেন। গতকাল বুধবার সকালে তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রফিকুল ইসলাম খালিয়াজুরি উপজেলার কৃষ্ণপুর মাদ্রাসাপাড়ার জব্বার আলীর ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাঁস রাখার জায়গা নিয়ে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের আলমাছ মিয়ার ছেলে আবদুর রাজ্জাক
ও হান্নান মিয়ার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আবদুর রাজ্জাক ও হান্নান মিয়া আরও কিছু লোক নিয়ে
কৃষ্ণপুরের পুতারকান্দা হাওর এলাকায় রফিকুলের ওপর হামলা চালান। 

তাঁকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। স্থানীয় লোকজন ও স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার সকাল আটটার দিকে তিনি মারা যান।

রফিকুলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত আবদুর রাজ্জাক ও হান্নান মিয়া গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।