জাবিতে অভিযোগ প্রমাণ করুন, অন্যথায় শাস্তি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং প্রয়াত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সহায়তা-ভাতা/অনুদানের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ঢাকা, ০৭ অক্টোবর। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং প্রয়াত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সহায়তা-ভাতা/অনুদানের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ঢাকা, ০৭ অক্টোবর। ছবি: পিআইডি

দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলছে। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলে অভিযোগকারীদের শাস্তি পেতে হবে। মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনের কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিকদের পরিবারের পাশাপাশি অসুস্থ, আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও আহত সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ইউএনবির খবরে বলা হয়, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি তাঁরা (আন্দোলনকারীরা) অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন, তবে তাঁরা অসত্য অভিযোগ উত্থাপনের জন্য শাস্তি পাবেন...আমরা অবশ্যই এটি করব। কারণ, দিনের পর দিন ক্লাস বন্ধ রাখা সহ্য করা হবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিযোগকারীদের সমস্ত অভিযোগ, বক্তব্য এবং ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।

অভিযোগকারীদের অবশ্যই অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কেউ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে অভিযোগকারীকে একই ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে; যেহেতু আইনেই এটা বলা আছে। তারা মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এ–জাতীয় পদক্ষেপ নেব। আমি এটি পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ। আজ বেলা দেড়টায়। ছবি: মাইদুল ইসলাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ। আজ বেলা দেড়টায়। ছবি: মাইদুল ইসলাম

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁরা উপাচার্যকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলছেন। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই যে যাঁরা দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন, তাঁদের এই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে এবং অভিযোগের সপক্ষে তথ্য সরবরাহ করতে হবে। যদি তাঁরা তথ্য সরবরাহ করতে পারেন, তবে আমরা অবশ্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে উপাচার্যের বাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের পাশাপাশি ক্লাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে বাধা দেওয়াও একধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।

বাসসের খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ‘তারা (প্রথম আলো) কীভাবে এ ধরনের অবহেলা করতে পারে। স্কুল শিক্ষার্থীরা যেখানে ঘোরাফেরা করছে সেখানে এই ধরনের একটি অনুষ্ঠান আয়োজনে তাদের কোনো দায়িত্বশীলতা ছিল না। এটি একটি গুরুতর অভিযোগ, এটি সহ্য করা যায় না।’

অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স এবং ট্রমা সেন্টারের মতো হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও ছাত্রটিকে মহাখালীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু।

দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ এনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বেশ কয়েক দিন ধরে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং ভিসিপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনার পর ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।