পটুয়াখালীতে নৌযান চলাচল বন্ধ

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’–এর প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পটুয়াখালীর অভ্যন্তরীণ নদীপথে যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগ–পরবর্তী চিকিৎসাসেবার জন্য মেডিকেল টিম গঠনসহ দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ–পরবর্তী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই সভায় দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে জেলার ৪০৩টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়। এ ছাড়া ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৬৬ বান্ডিল টিন, ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ৩ হাজার ৫০০ কম্বল প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানানো হয় সভায়।

সভায় উপকূলীয় দ্বীপের জনগণকে নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

পটুয়াখালী নদীবন্দরের পরিবহন পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সমুদ্রবন্দরে ৪ এবং নদীবন্দরে ২ নম্বর সংকেত দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার অভ্যন্তরীণ সব নদীপথে যাত্রীবাহী ছোট-বড় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জরুরি সভায় বক্তব্য দেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী। পটুয়াখালী, ০৮ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জরুরি সভায় বক্তব্য দেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী। পটুয়াখালী, ০৮ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

এদিকে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় মাছ ধরার ট্রলারগুলো উপকূলে নিরাপদ আশ্রয় নিচ্ছে। কুয়াকাটা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে হাজারখানেক মাছ ধরার ট্রলার উপকূলের গঙ্গামতী, ফাতরার চর, কাউয়ার চর, মৌডুবি, শিববাড়ীয়া চ্যানেল, আন্ধারমানিক নদীর চ্যানেলে আশ্রয় নিয়েছে। আরও ট্রলার গভীর সাগর থেকে উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে আসছে বলে জানান তিনি।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েত উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজরুল ইসলাম, সদর ইউএনও লতিফা জান্নাতি, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক স্বপন ব্যানার্জিসহ র‍্যাব-৮, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।