বরগুনার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ছুটছে মানুষ

বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। ছবি:মোহাম্মদ রফিক
বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। ছবি:মোহাম্মদ রফিক

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী আবাসন প্রকল্পের এলাকাটি ভাঙনকবলিত। এ আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা শাহানাজ তাঁর দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে বরগুনা পলিটেকনিক আশ্রয়কেন্দ্রে চলে এসেছেন।

শাহনাজ বলছিলেন, ‘জীবন বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আসছি। শুনছি এই বন্যাডা সিডরের চেয়েও নাকি অনেক বড়। তাই বন্যা শুরুর আগেই মোরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আইছি।’

এভাবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সম্ভাব্য আঘাত থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে আসছে মানুষ। পরিবার–পরিজন নিয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে তারা।

পোটকাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন সোবাহান। তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আইবে। মোরা আগেভাগেই আশ্রয়কেন্দ্রে আইছি। তবে মোগো গরু–ছাগল নিয়া আসতে পারিনি।’

পোটকাখালী আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা নূপুর রানী বলেন, ‘সিডরের সময় এমনই অবস্থা হইছিল।’

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। মাছ ধরার ট্রলার ও জেলে নৌকাগুলো উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার সব নদীপথে যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বরগুনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০৯টি স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাড়ে সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক, জেলার ৪২টি ইউনিয়নে প্রতিটিতে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ সময় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব বিভাগকে প্রস্তুত থাকার জন্য ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য বহুতল ভবন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও রোভার স্কাউটের সদস্যরাও যেকোনো ধরনের সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছেন।

বরগুনার দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপপরিচালক কিশোর কুমার সরদার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। আমাদের প্রায় সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।’