বাস-ইজিবাইক সংঘর্ষে সাতজন নিহতের ঘটনায় মামলা

পঞ্চগড় সদর উপজেলার আমতলা এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইকটি যাত্রীসহ দুমড়েমুচড়ে বাসের ভেতরে ঢুকে যায়। গতকাল দুপুরে।  ছবি: প্রথম আলো
পঞ্চগড় সদর উপজেলার আমতলা এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইকটি যাত্রীসহ দুমড়েমুচড়ে বাসের ভেতরে ঢুকে যায়। গতকাল দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ে যাত্রীবাহী বাস ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা-পুলিশের সার্জেন্ট সফিউর রহমান বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলাটি করেন। এতে কাজী ব্রাদার্স নামের ওই যাত্রীবাহী বাসের অজ্ঞাতনামা চালককে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়। প্রচণ্ড সংঘর্ষে ইজিবাইকটি দুমড়েমুচড়ে বাসের ভেতরে ঢুকে যায়। এই অবস্থায় প্রায় এক শ গজ সেটিকে ছেঁচড়ে নিয়ে যায় বাসটি। নিহত ব্যক্তিরা সবাই ইজিবাইকের আরোহী।

মামলায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোয় দণ্ডবিধির ৩০৪ এর ‘খ’ এবং সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৯৮/১০৫ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদের জিলানী।

গতকাল পঞ্চগড় সদর উপজেলার আমতলা এলাকায় বেলা দেড়টার দিকে বাস-ইজিবাইক সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে নিহত হন পাঁচজন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও দুজন। দুর্ঘটনার পর থেকে বাসচালক পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়ার লাবু ইসলাম (২৭), তাঁর নববিবাহিত স্ত্রী মুক্তি বেগম (১৯), সদর উপজেলার সুরিভিটা এলাকার আকবর আলী (৭০), তাঁর স্ত্রী নুরিমা বেগম (৫৭), সাতমেরা ইউনিয়নের চেকরমারী এলাকার ইজিবাইকচালক রফিকুল ইসলাম (৪০), একই ইউনিয়নের রায়পাড়া এলাকার ফরহাদ হোসেন ওরফে মাকুদ (৪৩) এবং সাহেবজোত এলাকার আকবর আলীর স্ত্রী নার্গিস (৪২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাজী পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া যাচ্ছিল। এ সময় সড়কের মধ্যে একটি ছাগল এসে পড়লে তা পাশ কাটাতে গিয়ে ওই ইজিবাইকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বাসটির। যাত্রীবোঝাই ইজিবাইকটি দুমড়েমুচড়ে বাসটির ভেতরে ঢুকে যায়। এই অবস্থায় সেটিকে আনুমানিক এক শ গজ ছেঁচড়ে নিয়ে যায় বাসটি। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ লোকজন বেলা দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাঁরা হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় গাড়ি ও ইজিবাইক থামিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনের তোপের মুখে পড়েন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও যান চলাচল শুরু হয়।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নিরঞ্জন সরকার বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসের ভেতরে ঢুকে যাওয়া ইজিবাইকটি থেকে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে পাঠানোর পথে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইজিবাইকের আরও দুই যাত্রী মারা যান।