নূর হোসেন ইয়াবাখোর-ফেনসিডিলখোর: জাপা মহাসচিব

মসিউর রহমান (রাঙ্গা)
মসিউর রহমান (রাঙ্গা)

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ নূর হোসেন মাদকাসক্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মসিউর রহমান (রাঙ্গা)। তাঁর দাবি, নূর হোসেন ইয়াবাখোর, ফেনসিডিলখোর ছিলেন।

আজ রোববার জাতীয় পার্টির মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব এ কথা বলেন। জাপা বনানীর কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মসিউর রহমান বলেন, এই নূর হোসেনকে নিয়ে দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নাচানাচি করে।

জাপা মহাসচিব বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাকে হত্যা করলেন। নূর হোসেনকে? নূর হোসেন কে? একটা অ্যাডিকটেড ছেলে। একটা ইয়াবাখোর, ফেনসিডিলখোর।’ তাঁর দাবি, নূর হোসেনের হত্যার ঘটনায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ বা তাঁর সরকার দায়ী ছিল না। যে ধরনের গুলিতে নূর হোসেন মারা গেছেন, সে ধরনের গুলিও তখন পুলিশ ব্যবহার করত না।

গণতন্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলের অবস্থানের সমালোচনা করেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই দুই দলের গণতন্ত্র হলো ফেনসিডিলখোর, ইয়াবাখোর, যারা ক্যাসিনোর ব্যবসা করে তাদের নিয়ে। এরাই হলো দুই দলের কাছে গণতন্ত্রের সোনার সন্তান। জাপা মহাসচিব বলেন, সরকার রাজনীতিবিদেরা কী করছে তা দেখে, কিন্তু ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত যে সম্রাট তাকে এই সরকার, পুলিশ, প্রশাসন কেউ এত দিন দেখেনি। কেননা এই সরকার মনে করে সম্রাটরা যা করে, গণতান্ত্রিক ভাবে করে। রাঙ্গা বলেন, এখন সোনার ছেলেদের ক্যাসিনো ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির ইতিহাস বের হচ্ছে। কিন্তু এত দিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সোনার ছেলেদের দেখেনি, তাদের দৃষ্টি ছিল শুধু রাজনৈতিক নেতাদের দিকে।

রাঙ্গা বলেন, এইচ এম এরশাদই এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কথা ছিল তাঁকে জেলে নেওয়া হবে না। কিন্তু বিচারপতি ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবউদ্দিন আহমেদ তা মানেননি।

জাপা নেতা বলেন, নূর হোসেনের মৃত্যু নিয়ে এত হইচই হলো। কিন্তু এখন এমন একটা দিন নেই যেদিন খুন হচ্ছে না। হাজার হাজার খুন হচ্ছে। বিশ্বজিৎ, আবরার খুন হয়েছেন। নারীরা একজন আরেকজনকে কোপাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, নূর হোসেন এবং ডাক্তার মিলনকে কারা হত্যা করেছে, কেন হত্যা করেছে এবং কীভাবে হত্যা করেছে, তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে। তিনি নূর হোসেন এবং ডাক্তার মিলন হত্যার প্রকৃত খুনিদের বিচার দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘নুর হোসেন ও ডাক্তার মিলন হত্যার ইস্যু তুলে দেশের মানুষকে বারবার বিভ্রান্ত করা হয়। আমাদের নেতা পল্লিবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে অপবাদ দেওয়া হয়। এর একটা সমাধান জরুরি হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে নূর হোসেন ও ডাক্তার মিলনসহ ষড়যন্ত্রমূলক সব হত্যার বিচার করা হবে।

আলোচনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সুনীল শুভরায় প্রমুখ।