'মাদকসম্রাট' ইশতিয়াকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সম্পদবিবরণী নোটিশ জারির পর তা জমা না দেওয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইশতিয়াক ও তাঁর স্ত্রী পাখির বিরুদ্ধে মামলা করেছে সংস্থাটি। তাঁদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনেরও অভিযোগ আনা হয়।

আজ সোমবার দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুটি আলাদা মামলা করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক সাইদুজ্জামান।

দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে মামলার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ দুজনের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জুলাই মাসে তাঁদের সম্পদবিবরণীর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা তা জমা দেননি।

দুদক সূত্র জানায়, জুলাই মাসে এ দুজনের বিরুদ্ধে যখন নোটিশ জারি করা হয়, তখন তাঁদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ঢাকার আশুলিয়ায় তাঁদের মালিকানাধীন আরফিন ভিলা নামে একটি বাড়িতে গিয়ে ইশতিয়াক ও তাঁর স্ত্রী পাখিকে বাড়িতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে ওই বাড়িতে নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ইশতিয়াক অবৈধ অর্থের মাধ্যমে ২৭ লাখ টাকার জমি কিনেছেন নিজ নামে। এ ছাড়া বাইপাইল মৌজায় ৪ শতাংশ জমি ও তার ওপর ছয়তলাবিশিষ্ট ভবন ও জমির অর্ধেক, ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ জমির একতলা একটি ভবন এবং ৮ দশমিক ২৮৩ শতাংশ জমির ওপর সাততলা ভবনের অর্ধেকের মালিক হয়েছেন।

পাখি অবৈধ অর্থের মাধ্যমে ২৮ লাখ টাকার জমি কিনেছেন নিজ নামে। এ ছাড়া বাইপাইল মৌজায় ৪ শতাংশ জমি ও তার ওপর ছয়তলাবিশিষ্ট ভবন ও জমির অর্ধেক, দিয়াখালি মৌজায় ৮ দশমিক ২৮৩ শতাংশ জমির ওপর সাততলা ভবনের অর্ধেকের মালিক হয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় বসবাস করেন ইশতিয়াক। তবে জেনেভা ক্যাম্প ছাড়িয়ে গাবতলী, আমিনবাজার ও সাভার এলাকায় তাঁর ব্যবসার ব্যাপ্তি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ইশতিয়াক সাভার-আশুলিয়ায় ‘কামরুল ইসলাম’ নামে পরিচিত।

সূত্রমতে, ইশতিয়াকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে। ছোটবেলায় টোকাই হিসেবে পরিচিতি ছিলেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসার সঙ্গে। এরপর থেকেই আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয় তাঁর। মাদকের বাজারে নিজেকে শীর্ষস্থানে নিয়ে যান, পরিচিতি পান মাদকসম্রাট হিসেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইশতিয়াকের নিজের পরিবহন ব্যবসা আছে। নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান আনেন ইশতিয়াক। এই ইয়াবার চালান রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেন নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।