রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছে গাম্বিয়া

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। দেশটির আইনমন্ত্রী আবু বকর তাম্বাদোউ আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) এই মামলা দায়ের করেছে গাম্বিয়া। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালতটি ‘ওয়ার্ল্ড কোর্ট’ নামেও পরিচিত। নেদারল্যান্ডসের শহর দ্য হেগে এই আদালত অবস্থিত।

আবু বকর তাম্বাদোউ আজ সোমবার দ্য হেগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘জেনোসাইড কনভেনশন অনুযায়ী আমরা আইসিজের কাছে আমাদের আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। এই অভিযোগের একটাই উদ্দেশ্য, নিজের জনগণের (রোহিঙ্গা) সঙ্গে মিয়ানমার যে আচরণ করেছে সেটির জন্য তাদেরই দায়ী করা। আমাদের চোখের সামনে গণহত্যা ঘটে যাওয়ার পরেও আমরা কিছুই করছি না, এটা আমাদের প্রজন্মের জন্য লজ্জাজনক।’ মিয়ানমার ও গাম্বিয়া দুই দেশই ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এই মামলা করেছে গাম্বিয়া। এই মামলায় পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ফোলে হোয়াগ’। প্রতিষ্ঠানটির আশা, আগামী মাসেই এই মামলার প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করা সংস্থাগুলো গাম্বিয়ার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়ে আসছিল তারা। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিনিধি পরম প্রীত সিং রয়টার্সকে বলেন, ‘গাম্বিয়ার এই পদক্ষেপ রোহিঙ্গাদের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, আইসিজে যদি মামলাটি গ্রহণ করে, তাহলে এক দিক থেকে এটি অনন্য হয়ে থাকবে। এর আগে গণহত্যা সংক্রান্ত কোনো মামলার তদন্ত আইসিজে একা করেনি। তদন্তকাজে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সহায়তা নিয়েছিল।

২০১৭ সালে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের তদন্তকারী দল বলেছে, গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।